নিজস্ব প্রতিবেদক ও কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি
অপারেশন থিয়েটারে চলছিল এক রোগীর হার্নিওপ্লাস্টি অপারেশন। কিন্তু নেই কোনো সার্জন আর অ্যানেস্থেটিস্ট। খালি গায়েই অপারেশন করছিলেন ফিরোজ কবির নামে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা। ঠিক সেই অবস্থায় তাকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জানা যায়, এমবিবিএস পাস না করেই নিজেকে সার্জন পরিচয় দেন ফিরোজ কবির।
অ্যানেসথেসিয়া সম্পর্কিত কোনো সনদ না থাকা সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত করছেন বড় বড় অপারেশন। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে অভিযান চালিয়ে আটকের পর তাকে দুইমাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
দণ্ডিত ফিরোজ কবির যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো)।
কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যানেস্থিটিস্ট ডা. ইমদাদ হোসেন জানান, ফিরোজ কবির এমবিবিএস চিকিৎসক না হয়েও দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগী দেখা ও অপারেশন করে আসছিলেন। শনিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন ফিরোজ কবির উপজেলা শহরের কপোতাক্ষ সার্জিক্যাল ক্লিনিকে অপারেশন করছেন। এরপর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীরকে জানানো হয়। পরে অভিযান চালিয়ে অপারেশনরত অবস্থায় ফিরোজ কবিরকে আটক করা হয়।
তিনি আরো জানান, ওটির ভেতরে গিয়ে দেখা যায় হার্নিওপ্লাস্টি অপারেশন চলছে। কিন্তু কোনো সার্জন নাই, এমনকি এনেস্থেটিস্টও নাই। ফিরোজ কবির খালি গায়ে অপারেশন করছেন। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশে খবর দেয়া হয়। কিছু সময় পর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা মো. শরীফ নেওয়াজ এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত গঠন করে ফিরোজ কবিরকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা মো. শরীফ নেওয়াজ জানান, দণ্ডবিধির ১৭০/৭১ ধারার অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি দুইবছর। কিন্তু সবকিছু বিবেচনায় ফিরোজ কবিরকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেয়া হয়েছে। শনিবার রাতেই তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয় এবং আজ তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চিকিৎসক জানান, ফিরোজ কবির এর আগেও বেশ কয়েকবার আটক হয়েছে কিন্তু জরিমানা পান। এই প্রথম তিনি কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলো। তবে এ ধরণের অপরাধ ঠেকাতে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত।