নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের অভয়নগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মিষ্টি কুমড়া ক্ষেতে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। কীটনাশক প্রয়োগেও ভালো ফল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তাদের। তবে সাদা মাছি পোকা ও ফল ছিদ্রকারী পোকায় আক্রান্ত হলে কৃষি অফিসে যোগাযোগ করে পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন।
অভয়নগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও কটি পৌরসভার ২৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করা হয়েছে। যা চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বীজ বপনের মধ্য দিয়ে শুরু করা হয়। তবে মিষ্টি কুমড়ার ক্ষেত্রে সাদা মাছি পোকা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা সবচেয়ে ক্ষতিকর। আক্রান্ত হলে গাছের পাতার রং হলদে হতে শুরু করে। পাতা আকারে ছোট ও কচিপাতা সরু হয়ে কুঁচকে খসখসে হয়ে যায়। কুমড়ায় ছোট ছোট ছিদ্র দেখা যায়। একসময় ফলে পচন ধরে তা নষ্ট হয়ে যায়। এ ব্যাপারে অবশ্যই চাষিকে তার ক্ষেত সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
নওয়াপাড়া পৌর এলাকার গুয়াখোলা গ্রামের সুব্রত রায় বলেন, ‘মাটিতে বীজ বপন করেছিলাম। মাচায় থাকা গাছের ফল খুব ভালো হয়েছে। কিন্তু মাটিতে থাকা ২-৩ কেজি ওজনের মিষ্টি কুমড়া নষ্ট হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। কীটনাশক দিয়েও কাজ হচ্ছে না। পরে বিচালি দেওয়া শুরু করেছি।’
চলিশিয়া ইউনিয়নের কোটা গ্রামের কামরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় ১ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছি। ভালো ফলও হয়েছে। সম্প্রতি সমস্যা দেখা দিয়েছে ক্ষেতে। মিষ্টি কুমড়ায় পচন ধরেছে। যে কারণে বিক্রি করতে পারছি না।’
চেঙ্গুটিয়া গ্রামের অর্জুন, সফিকুল, ইমরান বিশ্বাসসহ অনেক চাষি তাদের কুমড়া ক্ষেত নিয়ে একই অভিযোগ করেন। দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহযোগিতা কামনা করেছেন তারা।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, ‘মিষ্টি কুমড়া ক্ষেতে পোকার আক্রমণ দেখা দিলে দ্রুত কৃষি অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। অথবা মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে ডেকে আক্রান্ত ক্ষেত ও মিষ্টি কুমড়া দেখাতে হবে। তবে এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত কোনো চাষি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। করলে অবশ্যই সুপরামর্শ ও সহযোগিতা করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘মাটিতে থাকা ফলের নিচে বিচালি (খড়) দেওয়া অথবা ১০ শতাংশে ৩টি সেক্সফেরোমেন ফাঁদ স্থাপন করা যেতে পারে। এ ছাড়া বায়োক্লিন (জৈব বালাইনাশক) স্প্রেও করা যেতে পারে। লাউ চাষিদের ক্ষেত্রে একই পরামর্শ দিচ্ছি।’
