ইলিয়াস উদ্দীন: ‘পানির দরে না ভাই, পানি কিনতে পয়সা লাগে, বাতাস কিনতে তো আর পয়সা লাগে না। বাতাসের দরেই ফুল বিক্রি করলাম।’ – আক্ষেপের সাথে কথাটি বললেন ঝিকরগাছার নীলকন্ঠনগর গ্রামের গোলাপ ফুল চাষি হোসেন উদ্দীন। তিনি বলেন, ফুল ক্ষেত থেকে তুলে, বাজারে বিক্রি করার খরচটাও ওঠছে না। একমাত্র কারণ হলো বাংলা নববর্ষ রোজার মাসে হওয়ায়।
বাঙালির প্রতিটি ঘরে ঘরে বাংলা নববর্ষ ১৪২৯ উদযাপিত হবে আজ। নববর্ষ উদযাপনের প্রধান অনুসঙ্গ ফুল। বাংলাদেশের ৭০ ভাগ ফুলের চাহিদা মিটিয়ে থাকে যশোরের ঝিকরগাছার গদখালীর ফুল বাজার।
বুধবার সরেজমিনে ফুলের বাজারে গিয়ে জানা গেছে, লিলিয়াম ফুল প্রতি শ’ ৫০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা, গাঁদাফুল প্রতি হাজার ৪০ থেকে ১০০ টাকা, রজনীগন্ধা প্রতি শ’ ১০০ থেকে ১৫০টাকা, গোলাপফুল প্রতি শ’ ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, গ্লাাডিউলাস প্রতি শ’ ২০০থেকে ৫০০ টাকা, জারবেরা প্রতি শ’ ২০০ থেকে ৬০০ টাকা, চায়না গোলাপ প্রতি শ’ ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা প্রতি শ’ ১০০ টাকা, রডস্টিক ফুল এক আঁটি ২০ টাকা, কামিনী পাতা একট আঁটি ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
গাঁদাফুল চাষি মাগুরা গ্রামের আবুল কাশেম বলেন, রোজার মধ্যে দুই দিন দুই ডোল (এক ধরণের পাত্র) প্রায় ৫০ হাজার গাঁদাফুল ফেলে দিয়েছি। ক্ষেত থেকে তুলে বাজারে আনতে ১৭শ’ টাকা খরচ হয়েছিল। আজ ৪০ থেকে ১০০ টাকায় ফুলের মান ভেদে বিক্রি হলো।
রজনীগন্ধা চাষি পানিসারা গ্রামের আব্দুল সরদার বলেন, রোজার মাসে বাংলা নববর্ষ পড়ায় পানির দরে ফুল বিক্রি করতে হয়েছে। রোজার পরে এ ফুলের দাম আবার বাড়বে।
লিলিয়াম ফুল চাষি হাড়িয়ার সাজেদা বেগম জানান, রোজার কারণেই ফুলের দাম পেলাম না।
একাধিক ফুলচাষির ধারণা আজ বুধবার এবং ঈদের ৪-৫দিন আগে ফুলের দাম কিছুটা হলেও বাড়তে পারে।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সাবেক সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, প্রতি বাংলা নববর্ষ উদযাপনে কোটি টাকার ফুল বিক্রি হলেও এবার রোজার কারণে ৫ লাখ টাকার ফুল বিক্রি হবে কি না সন্দেহ আছে।