খুলনা ব্যুরো: মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে হানাদার বাহিনীর টর্চারসেল হিসেবে ব্যবহৃত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত টিনশেড ঘরটিকে ‘গল্লামারী বধ্যভূমি স্মৃতি জাদুঘর, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়’ হিসেবে সংরক্ষণ ও এর পারিপার্শ্বিক উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে খুলনার বিশিষ্ট বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সাথে এক মতবিনিময় সভা রোববার সকালে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, মুক্তিযুদ্ধকালীন বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলের মুজিব বাহিনীর প্রধান ও বাগেরহাট জেলা পরিষদ প্রশাসক বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ কামরুজ্জামান টুকু, খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসক বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ হারুনুর রশীদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ খুলনা জেলা ইউনিটের কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা সরদার মাহবুবার রহমান ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ খুলনা মহানগর ইউনিটের কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আলমগীর কবীর।
মতবিনিময়কালে উপাচার্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী স্বাধীনতার স্বপক্ষের নিরীহ শত শত মানুষকে হত্যা করে লাশ গল্লামারী ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ফেলতো। এখানে বিশেষ করে তৎকালীন খুলনা রেডিও সেন্টার কার্যকর ছিলো এবং সেটি হানাদার বাহিনীর শক্তিশালী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত হতো। রেডিও সেন্টারটির পাশেই অবস্থিত একটি টিনশেড ঘরে পাক সেনারা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী মানুষদের ধরে এনে নৃশংসভাবে নির্যাতনের পর হত্যা করতো। স্মৃতিবাহী সেই টর্চারসেল টিনশেড ঘরটি এখনও ক্যাম্পাসে বিদ্যমান রয়েছে। তবে তা সংস্কারের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এখনই এটা সংস্কার না করা হলে ভবিষ্যতে স্মৃতিচিহ্নটুকু থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নির্দশন হিসেবে রাখার উদ্দেশ্যে এই টর্চারসেলটিকে ‘গল্লামারী বধ্যভূমি স্মৃতি জাদুঘর, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন, ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. আবু তাহেরসহ বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সদস্যবৃন্দ স্থানটি পরিদর্শন করেছেন। তারা এ বিষয়ের স্বপক্ষে মত দিয়েছেন। এই টিনশেড ঘরটি সংস্কার ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়নে ইউজিসি থেকে প্রাথমিকভাবে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে বলে তিনি অবহিত করেন।