মহিউদ্দিন সানি, নরেন্দ্রপুর যশোর থেকে: তৈরি হচ্ছে পদ্মা সেতু। একই সেতুতে হবে সড়ক ও রেলপথ। নতুন করে ঢাকার কমলাপুর থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন ও ১৪ টি রেলওয়ে স্টেশন তৈরি হচ্ছে। নতুন করে তৈরি হবে রূপদিয়া রেলওয়ে স্টেশন। এরই মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ ভেঙে ফেলেছে প্রায় ৪০ বছরের পুরোনো রূপদিয়া রেলওয়ে স্টেশন ভবন। যশোর অংশে ব্রডগেজ রেললাইনটি সংযুক্ত হচ্ছে রূপদিয়া রেলওয়ে স্টেশনে। এতে বদলে যাবে রূপদিয়ার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চিত্র, বাড়বে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি মাথাপিছু আয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে ঢাকা-যশোর রেলপথ প্রকল্প। দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে প্রকল্পের কাজ। সমাপ্ত হবে ২০২৩ সালে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে ১৭ টি রেলওয়ে স্টেশন পার করে পদ্মবিলা জংশন রেলওয়ে স্টেশন হয়ে রূপদিয়া রেলওয়ে স্টেশনে পৌছাবে পণ্য ও যাত্রীবাহী ট্রেন। ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করছে ১৮ হাজার ২১০ কোটি টাকা, বাকি ২১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা অর্থায়ন করবে চীন।
ঢাকা-যশোর রেলপথ চালু হলে মাত্র ২ ঘন্টা ১৫ মিনিটে রূপদিয়া থেকে ঢাকা যাওয়া যাবে। রূপদিয়া রেলওয়ে স্টেশনে কম্পিউটার বেজড সিগন্যালিং ব্যবস্থা রাখা হবে। পণ্যবাহী ট্রেনগুলো রূপদিয়া রেলওয়ে স্টেশনে এসে আনলোড হবে। রূপদিয়া থেকে জামদিয়া, নড়াইল, লোহাগড়া, কাশিয়ানী, মহেশপুর, মুকসুদপুর, নগরকান্দা, ভাঙা, শিবচর, জাজিরা, মাওয়া, শ্রীনগর, নিমতলি, কেরানীগঞ্জ, গেন্ডারিয়া, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনসহ খুলনাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে।
এ প্রকল্পের কল্যাণে নিজেদের আর্থ-সামাজিক উন্নতির হবে। ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের অধীনে চাকরি করছেন অনেক বেকার যুবক। আবারও রূপদিয়া রেলওয়ে স্টেশন চালু হলে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। সমৃদ্ধ হবে এখানকার সামাজিক অবস্থান।
এ বিষয়ে রূপদিয়া রক্তদান সংস্থার আহ্বায়ক পি এম কামরুজ্জামান বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চলে উৎপাদিত সকল কৃষি ও শিল্পপণ্য পরিবহন, বিপণন সহজ হবে ফলে আঞ্চলিক বাণিজ্য সমৃদ্ধ হবে, সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে। এছাড়াও যেকোন ভারী পণ্য আমদানি ও রপ্তানির সুযোগ কাজে লাগিয়ে নতুন আয়ের উৎস হবে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় নতুন কলকারখানা চালু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ গৃষ্টি হবে। এছাড়াও স্থানীয় জনগণ উন্নততর স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য খুব সহজেই রাজধানী ঢাকা যেতে পারবেন। এ অঞ্চলের গার্মেন্টস ও প্রসাধনী ব্যবসায়ীরা কমমূল্যে এসব পণ্যসামগ্রী সংগ্রহ ও বিক্রি করতে পারবে।
২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হলেও রেলখাতের বৃহৎ এই প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হবে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে।