নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর সদরের তালবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহানাজ পারভীন ও সভাপতি কামাল হোসেন হিরা।
তারা দাবি করেন, কলেজের উপাধ্যক্ষ জিয়া হায়দার ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির তুহিন কলেজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়ম নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। মঙ্গলবার বিকাল তিনটার দিকে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে চলে সংবাদ সম্মেলন। একই সময় কলেজ অধ্যক্ষ ও সভাপতির নিয়োগ বাণিজ্যের বিরুদ্ধে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে দাবি করা হয় যশোর সদরের তালবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি কামাল হোসেন ও অধ্যক্ষ ড. শাহানাজ পারভীন দীর্ঘদিন ধরে কলেজের নিয়োগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন খাত থেকে টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করতে থাকে। সর্বশেষ সম্প্রতি কলেজে চতুর্থ শ্রেণির পদ মর্যাদার ৬টি পদে কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রায় কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। এলাকার একাধিক লোকের কাছ থেকে ১৫ থেকে ১৮ লাখ পর্যন্ত টাকা হাতিয়ে নেয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। এরমধ্যে কয়েক জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চাকরি না দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ অবস্থায় বিষয়টি জানাজানির পর সোমবার কলেজের সামনে এবং মঙ্গলবার প্রেসক্লাব যশোরের সামনে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। নওয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর তুহিনের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক সমর্থক মানববন্ধনে অংশ নেয়।
এদিকে এই অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহানাজ পারভীন ও সভাপতি কামাল হোসেন হিরা। কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহানাজ পারভীন বলেন, কলেজের সভাপতি ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের কোন্দলের ফলে তার বিরুদ্ধে এমন যড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তার আমলে কোন রকম নিয়োগ বাণিজ্য হয়নি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি সব সময় প্রস্তুত আছি। তদন্ত করলে কোনো অনিয়ম প্রমাণ করা যাবে না। তিনি বলেন, অফিসের পিয়ন দিয়ে গাড়ি চালানোর বিষয়ে কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভায় রেজুলেশন করে অনুমতি নেয়া আছে।
আর কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি কামাল হোসেন সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, নওয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাথে আমার দ্বন্দ্ব থাকায় তিনি এলাকার লোকজনদের দিয়ে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছেন। কলেজের উপাধাক্ষ জিয়া হায়দার ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তুহিন কবির তুহিন কলেজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য এই মিথ্যাচার করেছেন। সর্বশেষ নানা অভিযোগে কলেজের উপাধ্যক্ষকে শোকজ করা হয়েছে। নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ কখনও প্রমাণিত হবে না।
এ বিষয়ে নওয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর তুহিন বলেন, বর্তমান পরিচালনা পরিষদের সভাপতির আমলেই কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান। এর পর থেকেই তারা দু’জন মিলে কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দিতে গিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এই অধ্যক্ষের আমলে ৯টি নিয়োগে চরমভাবে অর্থবাণিজ্য করা হয়েছে। সর্বশেষ ৬ টি পদে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে বড় অংকের দুর্নীতি হয়েছে। অনেকে টাকা দিয়েও চাকরি পাননি বলে তিনি দাবি করেন। চেয়ারম্যান তুহিন বলেন, আমার ইউনিয়নের একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের এমন দুর্নীতি মেনে নেয়া যায়না। তাই নিজের বিবেকের তাড়নায় এলাকাবাসীর সাথে সংহতি জানিয়ে এ মানববন্ধনে অংশ নিয়েছি।