অধিবাস ও অঞ্জলীর মধ্য দিয়ে পূজা শুরু
পাপিয়া মল্লিক
ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে যশোরে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ঘট স্থাপন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে পূজার সূচনা হয়। এ সময় ভক্তরা উপবাস থেকে দেবী দুর্গার চরণে অঞ্জলি নিবেদন করেন এবং শান্তি, সমৃদ্ধি ও সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করেন।
এদিকে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আজ যশোরে সম্প্রীতি শোভাযাত্রা বের হয়েছে। শহরের লালদীঘিপাড়ে পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা কার্যালয়ের সামনে থেকে শোভাযাত্রা বের হয়।
শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজহারুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার রওনক জাহান, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, জেলা জামায়াতের আমীর গোলাম রসুল, যশোর সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা একরাম-উদ-দৌল্লা, সাধারণ সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি হারুন অর রশিদ, পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা সভাপতি দীপংকর দাস রতন, সাধারণ সম্পাদক তপন ঘোষ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, প্রতিবছরের মতো এবারও দুর্গোৎসবকে ঘিরে যশোরে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। শহরের অলিগলি, পাড়া-মহল্লা ও গ্রামীণ এলাকাজুড়ে চলছে পূজার প্রস্তুতি। বিভিন্ন পূজামণ্ডপ সাজানো হয়েছে আলোকসজ্জা, তোরণ ও রঙিন ব্যানারে। চারদিকে বাজছে আগমনী গান, ভক্তদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে।
এ বছর যশোর জেলায় ৭০৫টি মন্দির ও মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৬২টি, অভয়নগরে ১২৭টি, কেশবপুরে ৯৮টি, মণিরামপুরে ৯৬টি, বাঘারপাড়ায় ৯১টি, ঝিকরগাছায় ৫৪টি, চৌগাছায় ৪৮টি ও শার্শায় ২৯টি মন্দির রয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি মণ্ডপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। শহরজুড়ে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা, বিশেষ চেকপোস্ট ও মেটাল ডিটেক্টর।
উৎসব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, আনসার ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও মাঠে কাজ করছে। স্থানীয় পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মের মানুষও পূজা উৎসবে অংশ নেবেন। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এই উৎসবকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে এক মিলনমেলা।
আগামী শুক্রবার দশমী পূজার মধ্য দিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।