ঢাকা অফিস
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন করে মাঠ প্রশাসন সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তারই অংশ হিসেবে উপসচিবদের মধ্য থেকে জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে পদায়নের জন্য নতুন ফিট লিস্ট তৈরি শুরু করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় সুত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসক পদে পদায়নের জন্য ২৯ অক্টোবর ১০ জন উপসচিবের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ২০ জন উপসচিবের সাক্ষাৎ নেওয়া হয়েছে। আর ৩১ অক্টোবর শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আরও ১০ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে।
যে ৪০ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে, তাদের বেশিরভাগই বিসিএস ২৯ তম ব্যাচের কর্মকর্তা।
২৯ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে নির্বাচনি প্রস্তুতি-সংক্রান্ত বৈঠক করেছেন।
ওই বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, সবচেয়ে ফিট কর্মকর্তাকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পদায়ন করা হবে। তবে নিজ জেলা বা শ্বশুরবাড়ির এলাকায় কাউকে পদায়ন করা হবে না। তাদের কোনো আত্মীয়স্বজন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কি না পদায়নের ক্ষেত্রে সে বিষয়েও লক্ষ রাখা হবে। আগামী ১ নভেম্বর এগুলো শুরু হবে।
প্রেস সচিব বলেন, ‘মাঠ প্রশাসনে, বিশেষ করে ডিসি, এডিসি, ইউএনওসহ বিচারিক দায়িত্বে এমন কাউকে পদায়ন করা হবে না; যিনি গত তিনটি নির্বাচনি কাজে যুক্ত ছিলেন। ন্যূনতম ভূমিকা থাকলেও তাকে এই নির্বাচনে দায়িত্বে রাখা হবে না। পদায়নের ক্ষেত্রে কর্মকর্তার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা, শারীরিক যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা, গণমাধ্যমে অনিয়মের প্রতিবেদন হয়েছে কি না, তা দেখা হবে।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, জেলা প্রশাসক নিয়োগ বা পদায়নে সাধারণত কিছু নীতিমালা অনুসরন করা হয়। প্রথমে জেলা প্রশাসক হওয়ার উপযুক্ততা যাচাইয়ে উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে একটি ফিট লিস্ট তৈরি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই ফিট লিস্ট থেকে কর্মজীবনের দক্ষতা, জেষ্ঠতা ও অন্যান্য যোগ্যতার ভিত্তিতে ডিসি নিয়োগ করা হয়ে থাকে। একজন ডিসি একটি জেলার প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা। ওই জেলার তিন শতাধিক কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। নির্বাচনের সময় ডিসিরা সাধারণত রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার টেরিটোরিতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পুরো দায়িত্ব তার ওপর দেওয়া হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ৬৪ জেলায় ডিসি নিয়োগ করা যায়, এমন একটি ফিট লিস্ট ইতিমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের হাতে রয়েছে। এরপরও সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে আরও কর্মকর্তাদের বাছাই করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে নিরপেক্ষতা ও দক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের হাতে বেশি অপশন থাকে। সে অনুযায়ী নতুন ফিট লিস্ট তৈরি করা হচ্ছে। নভেম্বরের মধ্যেই বেশিরভাগ ডিসি পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।

 
									 
					