আলোচনায় রয়েছেন শহিদুল ইসলাম মিলন ও আব্দুল খালেক
এইচ আর তুহিন: সদ্য বিলুপ্ত হওয়া ৬১ জেলা পরিষদে শিগগিরই নতুন প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জেলা পরিষদের প্রশাসক নিয়োগের একটি খসড়া তালিকা চূড়ান্ত করেছে। এ তালিকায় রাজনীতিক থাকায় যশোর জেলা পরিষদের প্রশাসক পদে কে বসছেন তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
একাধিক সূত্র মতে, যশোর জেলা পরিষদের প্রশাসকে ঘুরে ফিরে তিনটি নাম আসছে। তালিকার শীর্ষে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আব্দুল মজিদ। এছাড়া যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা শহিদুল ইসলাম মিলন ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সদ্য বিলুপ্ত যশোর জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক রয়েছেন আলোচনায়।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসক হিসেবে যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে তাতে রাজনীতিবিদদের প্রাধান্য রয়েছে। সরকার আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে। নির্বাচনের আগে যারা স্থানীয় পর্যায়ের সম্ভাব্য প্রার্থী কিন্তু মনোনয়ন পাবেন না বা এলাকায় তাদের ভূমিকা আছে এ রকম ব্যক্তিদেরকে জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হতে পারে।
প্রসঙ্গত, বিগত জাতীয় সংসদ অধিবেশনে জেলা পরিষদ আইন সংশোধন বিল পাস হয়। এতে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা পরিষদগুলো বাতিল করার বিধান করে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছে। একই সাথে পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছে। এই আইনটি পাস হওয়ার পর গত ১৭ এপ্রিল এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার ৬১টি জেলা পরিষদ বিলুপ্ত করে। এরপরই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন।
অনেকের ধারণা ছিল, আমলাদের কর্তৃত্ব দেয়ার জন্যই জেলা পরিষদ বিলুপ্ত করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার জেলা পরিষদের কর্তৃত্ব রাজনীতিকদের হাতে রাখতে নতুন প্রশাসক নিয়োগ দিতে চলেছে। সংশোধিত আইনে প্রশাসক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুই ধরনের বিধান রাখা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের যেমন প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে, তেমনি বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরকেও সরকার প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আর এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জেলা পরিষদের প্রশাসক নিয়োগের একটি খসড়া তালিকা চূড়ান্ত করেছে। আগামী সপ্তাহেই এই তালিকা অনুযায়ী প্রশাসক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যশোর জেলা পরিষদের জন্য তিনজনের নাম আলোচনায় রয়েছে। এরমধ্যে শীর্ষে রয়েছেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আব্দুল মজিদ। তিনি দৈনিক কল্যাণকে জানান, শুনেছি আমার নাম শীর্ষে রয়েছে। আমার রাজনীতি শুরু ছাত্রলীগ থেকে। অনেক ঘাতপ্রতিঘাত সহ্য করে আওয়ামী লীগের আদর্শেই আছি। চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। মূল্যায়নের ব্যাপার নেত্রীর। নেত্রী যেটা ভালো বুঝবেন সেটাই করবেন।
এদিকে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মিলন তালিকায় রয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তিনি দৈনিক কল্যাণকে বলেন, তালিকায় আমার নাম রয়েছে। আমি দুই একদিনের মধ্যে ঢাকায় যাব। কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ রাখছি।
এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সদ্য বিলুপ্ত যশোর জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল খালেকও আলোচনায় রয়েছেন। তার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা তদবির করছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তিনি দৈনিক কল্যাণকে জানান, রাজনীতিকদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার খবর পেয়ে ঢাকায় নেতাদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। প্যানেল চেয়ারম্যান ছিলাম। আশা করছি প্রশাসক নিয়োগ পাবো।