নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে রোববার। একজনের নামের সংশোধন ছাড়া খসড়া তালিকাই চূড়ান্ত হয়েছে। আজ মনোনয়ন ক্রয়ের দিন। তবে বর্তমান সভাপতি আসাদুজামান মিঠু ও তার প্যানেল ছাড়া অন্য কেউ মনোনয়নপত্র কিনবেন না বলে জানা গেছে।
যদিও তফসিল ঘোষণার আগে যশোর জেলা ফুটবল রেফারি সমিতির কোষাধ্যক্ষ সোহেল আল মামুন নিশাদ ও রাহুল স্মৃতি সংঘের প্রতিনিধি শামস্-উল-বারী শিমুল সভাপতি পদে নির্বাচন করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। তবে ভোটার তালিকা প্রকাশের পর তারা সেই আগ্রহ হারিয়েছেন। দুজনই এ প্রতিবেদককে নির্বাচন করবেন না বলে জানিয়েছেন।
তাদের দাবি মিঠু বিজয়ী হওয়ার জন্য ক্রীড়াঙ্গনের সাথে সম্পৃক্ত না এমন লোকদেরকে ভোটার তালিকায় যুক্ত করেছেন। এছাড়া তড়িঘড়ি করে উপজেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন গঠন করা হয়েছে।
এদিকে আজ সোমবার হোটেল হাসান ইন্টারন্যাশনালে শামস্-উল-বারী শিমুল তার অনুসারিদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা করবেন বলে জানা গেছে। এ মতবিনিময় সভা শেষে ভোটের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে রাহুল স্মৃতি সংসদের প্রতিনিধি শেখ শামস্-উল বারী শিমুল জানান, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত ভোটার তালিকায় যারা স্থান পেয়েছেন তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন গুণী ক্রীড়া সংগঠক ও খেলোয়াড় রয়েছেন। এর বাইরে সিংহভাগ যারা রয়েছেন তাদের সাথে ফুটবলের সংশ্লিষ্টতা কতটুকু? প্রণীত ভোটার তালিকায় ফুটবলের কোনো জয় হয়নি। একটি পক্ষকে ক্ষমতায় আনার জয় হয়েছে। নির্বাচনের প্রবল আগ্রহ ছিল। এ অবস্থায় নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
এছাড়া তিনিও আরও বলেন, গঠনতন্ত্রে থাকলেও এতদিন উপজেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন গঠন না করে নির্বাচন সামনে তড়িঘড়ি করে উপজেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন গঠন করা হয়েছে।
শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের প্রতিনিধি মান্না দে লিটু সাংবাদিকদের জানান, জেলা ফুটবলের নেতৃত্ব দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত একজনের হাতে রয়েছে। ফুটবলের কতটা উন্নতি হয়েছে তা জেলার ফুটবল প্রেমীরা দেখেছেন। আমরা চেয়েছিলাম নেতৃত্বে পরিবর্তন আসুক। সে লক্ষ্যে কাজ করেছিলাম। কিন্তু প্রণীত ভোটার তালিকায় ফুটবলের মহিমা অত্যান্ত কম। এছাড়া মনোনয়নপত্রের অস্বাভাবিক মূল্যে এটি কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না। সে কারণে নির্বাচন করার কোনো আগ্রহ নেই।
শেখ সাখাওয়াত স্মৃতি সংঘের শেখ শাহজাহান রনি ও উপশহর ব্রাদার্স ইউনিয়নের কাজী জামাল হোসেন জানান, তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন না। এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দিতে চাননি তারা।
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, যশোরের প্রতিনিধি ও জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী সদস্য সাব্বির আহমেদ পলাশ জানিয়েছেন, সব সময় ফুটবলের সাথে ছিলাম। প্রচেষ্টা থাকবে ফুটবলকে জাগরণের জন্য সাথে থাকার। বিগত সময়ে কারা ফুটবলের বুকে চাকু মেরেছে, ফুটবল যাতে মাঠে না গড়ায় তার জন্য কারা নানা ষড়যন্ত্র করেছে তাদের বিষয়ে ফুটবল পাগল মানুষ ভালো জানে। ফুটবলকে পিছিয়ে দিতে নয়, আরও গতিশীল করার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো।
জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আসাদুজামান মিঠু জানান, নির্বাচন একটি চলমান প্রক্রিয়া। নির্বাচনে কে অংশ নেবেন আর কে নেবেন না তা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে ফুটবলের শৈলীটা ফুটিয়ে তোলার জন্য সব সময় সচেষ্ট ছিলাম। ফুটবলের নির্দিষ্ট মাঠ নাই। অনেকেই তো ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ফুটবল যাতে মাঠে না গড়ায় সে চেষ্টাও করেছে। এ কাজের সাথে যারা সংশ্লিষ্ট তারা কি লাভবান হয়েছে? প্যানেলের মাধ্যমে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো। জয় লাভ করলে অতীতের মতো সবাইকে নিয়ে কাজ অব্যাহত রাখবো। অতীতে ফুটবল নিয়ে অনেকেরই ব্যক্তিগত আয়ের উৎসে পরিণত করেছিল। তারাই আবার নানা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, যশোর জেলা কার্যনির্বাহী পরিষদের মেয়াদ শেষ হয় বিগত বছরের ২ নভেম্বর। দেশের নানা ইস্যুকে কেন্দ্র করে দু’দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়। বর্ধিত সময় বাড়ানোর মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ১ জুন।
