নিজস্ব প্রতিবেদক
নড়াইল জেলা পুলিশের প্রচেষ্টায় ১২ ঘণ্টার মধ্যে সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের হুগলাডাঙ্গা গ্রামের দিপ্ত সাহা হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে যশোর পুলিশ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মাদক কেনার জন্য দিপ্ত’র মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তাকে খুন করা হয়। এ ঘটনায় আটক তিন আসামি হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে বলে জানান যশোর পিবিআই’র পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন। একই সাথে ছিনতাই হওয়া মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের হুগলাডাঙ্গা গ্রামের দীপ্ত সাহা একই গ্রামের পার্শ্ববর্তী গরাণতলা মহাশ্মশানে তার নিজ ব্যবহৃত অ্যাপাচি মোটরসাইকেল নিয়ে নামযজ্ঞ শুনতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরদিন বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় একই গ্রামের হাজরাতলা মহাশ্মশানের পাশে একটি মাছের ঘের থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনার পর যশোর পিবিআই’র ক্রাইমসিন টিম ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শামীম মুসার নেতৃত্বে চৌকস দল ছায়া তদন্তকালীন সময়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নড়াইল সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের সুমন সরকার (৩০), সজীব কুমার বিশ^াস (২২) ও আকাশ রায়কে (২১) নিজ নিজ বাড়ি হতে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া ভিকটিম মৃত দীপ্ত সাহা এর খোয়া যাওয়া মোটরসাইকেলসহ জব্দ করা হয়।
পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকা-ের সাথে জড়িত মর্মে স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামি সুমন সরকার, সজীব কুমার বিশ্বাস, আকাশ রায় ও ভিকটিম দীপ্ত সকলেই মাদকাসক্ত। তারা একসাথে বসেই মাদক সেবন করতো। আসামি সুমন সরকার, সজীব কুমার বিশ^াস ও আকাশ রায়’দের টাকা প্রয়োজন হলে তারা ভিকটিম দীপ্তকে হত্যা করে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ছিনতাই করবে মর্মে পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনানুযায়ী আসামিরা ভিকটিম দীপ্তকে মোবাইল করে ঘটনাস্থলে আসতে বলে। ভিকটিম দীপ্ত ঘটনাস্থলে আসলে আসামিরা দীপ্তকে গাঁজা সেবনের উদ্দেশ্যে গাঁজা বানাতে দেয়। দীপ্ত গাঁজার মসলা বানাতে ব্যস্ত থাকাকালে আসামি আকাশ ও সজীব দীপ্তর গলায় পেছন থেকে নাইলোনের দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে দড়ির এক প্রান্তে আকাশ ও অপর প্রান্তে সজীব টেনে ধরে দীপ্তর মৃত্যু নিশ্চিত করে। মৃত দীপ্তর পকেট থেকে মোটরসাইকেলের চাবি বের করে নিয়ে ঘটনাস্থলের পাশে থাকা পুকুরে দীপ্তর মৃতদেহ ফেলে দেয়। এরপর আসামি আকাশ ও সজীব আসামি সুমনকে মোবাইল ফোন করে জানায় যে, তারা দীপ্তকে মেরে ফেলেছে, দীপ্তর মোটরসাইকেলে তেল কেনার জন্য টাকার প্রয়োজন। আসামি সুমন টাকার ব্যবস্থা করছি বলে ফোন কেটে দেয়।