নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের ভাতুড়িয়া এলাকায় মুক্তেশ্বরী নদী জালিয়াতি করে ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড এবং ভরাট করে প্লট হিসেবে বিক্রির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। একই সাথে নদীতে দেয়া বাঁধ উচ্ছেদ করে পানি প্রবাহ সচল করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বুধবার কালেক্টরেট সভাকক্ষে জেলা নদী রক্ষা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
অভিযোগ মতে, জালিয়াতি করে মুক্তেশ্বরী নদীর জমি ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড করে এখন তা প্লট আকারে বিক্রির চেষ্টা চলছে। আর নদী ভরাট করে দুই অংশকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলায় বিল হরিণায় বেড়েছে জলাবদ্ধতা। স্থানীয়দের ভাষ্য, ‘রাস্তায় কালভার্ট আছে। কালভার্টের একপাশে নদী আছে, আরেক পাশে নেই। অন্ধ লোকও বলবে এখানে নদী ছিল। কিন্তু এখন জামাল, কামাল ও মুন্নাসহ কয়েকজন ওই জমি ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড করে প্লট আকারে বিক্রি করার সাইনবোর্ড দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী গতকাল রাতে মুঠোফোনে বলেন, ওই জমি মুক্তেশ^রী নদীর। আরএস রেকর্ডের সময় সেটা জালিয়াতি করে ব্যক্তি মালিকানায় করে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তারা জানতে পেরে সংশ্লিষ্টদের সাথে করণীয় বিষয়ে আলাপ করছিলেন। বিষয়টি গতকাল জেলা নদী কমিটির মিটিংয়েও আলোচনা হয়। জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় দখলদারদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
তিনি আরো বলেন, নির্দেশ পেয়ে আমরা এখন দুটি পদক্ষেপ নেবো। একটা হলো ওই জমি খাস খতিয়ানভুক্ত করা, অন্যটা দখলমুক্ত করে পানি প্রবাহ সচল করা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মুক্তেশ্বরী নদীটি যশোরের চৌগাছা উপজেলা থেকে এসে সদর উপজেলা হয়ে বিল হরিণায় গিয়ে শেষ হয়েছে। সর্পিলাকার এ নদী দিয়ে বর্ষাকালে যশোর সদর উপজেলা ও শহরের একাংশের পানি দক্ষিণমুখী হয়ে বিল হরিণায় গিয়ে পতিত হয়। ৮০-র দশকে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পরিকল্পনায় মুক্তেশ্বরী নদীর সঙ্গে একটি খাল খনন করা হয়। যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের চাঁচড়া দক্ষিণপাড়া থেকে এ খালটি খনন করে পূর্বদিকে সতিঘাটা হয়ে ঢাকুরিয়ার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটি ‘জিয়ার খাল’ নামে পরিচিত। আর এখান থেকে মুক্তেশ্বরী নদীটি আরো কয়েক কিলোমিটার দক্ষিণে গিয়ে বিল হরিণায় একাধিক খালে বিভক্ত হয়ে মিশে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, এ খাল কাটার পর থেকে মুক্তেশ্বরী নিচের অংশ ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করতে শুরু করেন প্রভাবশালীরা। কখনো ইজারা, কখনো দখলদারত্বের মাধ্যমে মাছ চাষ হলেও পানিপ্রবাহ বিদ্যমান ছিল। কিন্তু কয়েক মাস আগে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র ভাতুড়িয়া নারায়ণপুর সড়কের কালভার্টের উত্তর পাশ থেকে জিয়ার খালের সংযুক্তমুখ পর্যন্ত মাটি ফেলে ভরাট করতে শুরু করে। পুরো এ অংশটি ভরাট করে এখন সেখানে প্লট বিক্রির সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। খাল কাটার পর থেকে মুক্তেশ্বরীর নিচের অংশ ইজারা নিয়ে মাছচাষ করতে শুরু করেন প্রভাবশালীরা। কখনো ইজারা, কখনো দখলদারত্বের মাধ্যমে মাছ চাষ হলেও পানিপ্রবাহ বিদ্যমান ছিল। কিন্তু কয়েক মাস আগে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র ভাতুড়িয়া নারায়ণপুর সড়কের কালভার্টের উত্তর পাশ থেকে জিয়ার খালের সংযুক্তমুখ পর্যন্ত মাটি ফেলে ভরাট করতে শুরু করে। পুরো এ অংশটি ভরাট করে এখন সেখানে প্লট বিক্রির সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।
