একইভাবে মাঠে আছে জেলা জামায়াত ইসলামী
নিজস্ব প্রতিবেদক
তৃণমূল নেতাকর্মীকে চাঙ্গা ও জনগণের মনজয়ে পুরো রমজানজুড়ে ওয়ার্ড পর্যায়ে তথা গ্রামে গ্রামে ইফতার মাহফিল আয়োজন করছে যশোর জেলা বিএনপি। এর মাধ্যমে দল গোছানো এবং নিজেদের মধ্যে সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে বলেও মনে করছেন অনেকে। কেউ কেউ এই ইফতার মাহফিলকে ভোটের প্রস্তুতি হিসেবেও দেখছেন। এ ছাড়া প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ মাঠে না থাকলেও এখন নতুন নতুন সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীদের। বিশেষ করে তারা জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে চিন্তিত। এ কারণে দলকে সংগঠিত করাই মূল কাজ বলে বিএনপি মনে করছেন।
বিএনপির মতো মাঠে রয়েছে জেলা জামায়াত ইসলামীও। তারাও পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে ইফতার ও শুভেচ্ছা বিনিময়ে আস্থা অর্জনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
৫ আগস্টে শেখ হাসিনার পতনের পর যশোরে জামায়াত দল গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তেমন অভিযোগ না থাকলেও একের পর এক অভিযোগ উঠে বিএনপি নেতা-কর্মীদের নামে। দোকানপাট, নওয়াপাড়া নৌবন্দর ঘাট, মৎস্য ঘের, বাঁওড়, জায়গা-জমি, মার্কেট সব জায়গায় দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠে।
জেলা বিএনপি বলছে ‘বিশৃঙ্খলাসহ নানা অভিযোগে দুই শতাধিক নেতা-কর্মীর নামে অভিযোগ আসে। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দেড় শতাধিক নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার, শোকজ ও পদ স্থগিত করেছি। কেউ অনিয়ম করলে দল দায়িত্ব নেবে না।
এদিকে, বিএনপি ইফতারের মাধ্যমে মাঠ নিজেদের দখলে রাখা, মাহফিল থেকে দ্রুততম সময়ে নির্বাচনের দাবি আরও জোরালো করছে। নির্বাচন কোনোভাবে বিলম্বিত হলে নেতাকর্মীরা যাতে আশাহত না হন সেজন্য এমন জননন্দিত কর্মসূচি পালন করছে।
জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, জেলার প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দলটির নেতাদের ইফতার মাহফিল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। হামলা-মামলা দিয়ে গত ১৭ বছর বিএনপিকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেই জায়গাটি মাথায় রেখে বিএনপির সাথে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। মূলত জনগণের সাথে সেতুবন্ধন করতেই এই আয়োজন। শক্তি নয় ভক্তি দিয়ে জনগণের মন জয়ের চেষ্টা করা হচ্ছে।
জেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও দল চাঙ্গা করার নির্দেশনা দিয়েছেন। ইফতার মাহফিল এমনভাবে করতে বলা হয়েছে, যাতে সব মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়। এ ছাড়া এবার সাধারণ মানুষকে যেমন সম্পৃক্ত করার নির্দেশনা রয়েছে, ঠিক তেমনি হাটবাজার, খোলা ময়দানে ইফতার মাহফিল করারও নির্দেশনা রয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাবেক দফতর সম্পাদক ও সাবেক এমপি মফিকুল হাসান তৃপ্তি বলেন, তারেক রহমানের ইচ্ছা তাঁর দলের নেতাকর্মীদের সাথে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন না হন। তাই সবাইকে এবারের ইফতারে সম্পৃক্ত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। বিভেদ নয়, ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্যই এই আয়োজন।
অন্যদিকে জেলা জামায়াতও প্রতি উপজেলায় ইফতার আয়োজন করে সাধারণ মানুষের কাছে টানার চেষ্টা করছে। বিষয়টি স্বীকার করেছেন যশোর জেলা প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, জেলার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ইফতার মাহফিল আয়োজনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।