নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে অনুরাগ ইসলাম অপু হত্যা মামলা করে বিপাকে পড়েছেন বাদী ও তার পরিবার। প্রশাসনের চোখে পলাতক থাকলেও কয়েকজন আসামি এখনও প্রকাশ্যে রয়েছে। তারা মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য স্বজনদের অব্যাহতভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। ফলে হত্যার বিচার পাওয়া ও জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে এখন সংশয়ে রয়েছেন বাদী।
অবশ্য পুলিশ বলছে তদন্ত শেষে চার্জশিট দাখিল করার পরে পলাতক বা জামিনে আসা আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে আদালতের আদেশ ছাড়া সম্ভব নয়।
এজাহারে মামলার বাদী নুর জাহান সীমা উল্লেখ করেছেন, অপু বড় বাজারে মাছের ব্যবসা করতেন। আসামি কুটির সাথে তার পাওনা টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। ২০২২ সালের ১৯ মে কুটি, ইয়াদ, রিয়াদ, রফিকুল ইসলাম, কুদ্দুস ও কুরবানের সাথে বিরোধের জের ধরে অপুর বন্ধুকে ছুরিকাঘাত করে। এই ঘটনায় ওই দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়।
কিন্তু মামলা করার পরে অপুর উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার জন্য ষড়যন্ত্র ও সুযোগ খুঁজতে থাকে। তারই সূত্র ধরে চলতি বছরের ৭ জুন সকাল ৬টার দিকে অপু ব্যবসার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হলে রিক্সায় চড়ে বড় বাজারের মাছ বাজারে যাচ্ছিলেন। আমিনিয়া আলিয়া মাদরাসার সামনে পৌছানো মাত্র দুর্বৃত্তরা তার রিক্সার পথরোধ করে। এরই মধ্যে অপুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে রাস্তায় ফেলে দেয়। খবর পেয়ে বাড়ি অপুর মাসহ পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় নিহত অপুর মা নুরজাহান সীমা কোতোয়ালি মডেল থানায় ওই সাতজনসহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলার আসামি আনোয়ার, কুদ্দুস, কুটি, ইয়াদ, রিয়াদ ও আশরাফ বিভিন্ন সময় আটক ও আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এরমধ্যে আসামি রিয়াদ ও আশরাফ জামিনে এবং আনোয়ার, কুদ্দুস, কুটি ও ইয়াদ জেলহাজতে গ্রেপ্তার রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মামলার আসামি কুরবানকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে জামিনে আসা রিয়াদ ও আশরাফ এবং পলাতক থাকা কুরবান আলী বিভিন্ন সময় অপু হত্যা মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য বাদী ও তার পরিবারকে অব্যাহতভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। সম্প্রতি জামিনে থাকা আসামি রিয়াদ এই মামলা প্রত্যাহার করা না হলে আবারও খুনখারাবি হতে পারে বলে হুমকি দিয়েছে নিহত অপুর বোনের ছেলেকে। ফলে মামলাটি করেই যেন বাদী ও তার পরিবার এখন বিপাকে পড়েছে। দ্রুত ওই আসামিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা না হলে মামলাটি ন্যায় বিচার পাওয়া কঠিন হবে। এছাড়া এখন বাদীর পরিবারের জীবনের নিরাপত্তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।
তবে এলাকাবাসী জানিয়েছে, আসামি কুরবান পলাতক থাকলেও তাকে এলাকায় প্রকাশ্যেই দেখা যায়। পুলিশ একটু তৎপর হলে কুরবানকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, মামলার চার্জশিট দেয়ার পরে আসামি গ্রেপ্তারের জন্য আদালত থেকে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়নি। তবে সরাসরি কোন অপরাধে জড়িত বা কেউ কোন অভিযোগ দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।