নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে পরিবার পরিচিতি ফরম (টিসিবির পণ্যের জন্য তালিকাভুক্তি কার্ড) বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে এই অনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ। মুখ চেনা, পরিচিত, কাছের লোকদেরকে বেছে বেছে পরিবার পরিচিতি ফরম বিতরণ করা হচ্ছে। ফরম বিতরণে সরকার নির্দেশিত কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, টিসিবির পণ্য বিতরণ কার্যক্রম শৃংখলার মধ্যে আনতে চাচ্ছে সরকার। গরীব অসহায় ও দুঃস্থরা যাতে টিসিবির পণ্য পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে বিতরণ করা হচ্ছে পরিবার পরিচিতি ফরম। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে এই ফরম বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু যে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পরিবার পরিচিতি ফরম বিতরণ করা হচ্ছে শুরুতে তাদের বিরুদ্ধেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। যশোর পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানান, তাদের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাবলু নাথের কাছে পরিবার পরিচিতি ফরম নিতে গেলে তাদেরকে দেয়া হয়নি। বাবলু নাথ তার নিজের কাছের লোক, পরিচিত ও মুখ চিনে ফরম বিতরণ করছেন। এ ওয়ার্ডে গরীবদের ফরম দেয়া হচ্ছে না। একই অভিযোগ করেছে পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড ঘোপের বাসিন্দারা। তারা বলেছেন ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মকসিমুল বারি অপু নিজে পরিবার পরিচিতি ফরম বিতরণ করছেন না। তিনি তার চামচাদের কাছে ফরম দিয়ে রেখেছেন। যেমন ঘোপ জেলরোড বেলতলা বউ বাজার এলাকার মাজেদা ওরফে কটে, একই এলাকার সাগর ও দড়াটানা বটতলার মিলনের কাছে ফরম দিয়ে রেখেছেন। এই চামচারা তাদের কাছের লোক, পরিচিত ও মুখ চিনে ফরম বিতরণ করছে বলে এলাকাবাসীর একাধিক অভিযোগে জানা যায়। দড়াটানা এলাকার তোফাজ্জেল হোসেন ও করিম আলী জানান, মিলনের কাছে ফরমের জন্য গেলে সে বলে ফরম নেই, কামরুজ্জামান নামে অপর এক ব্যক্তি বলেন ফরমের জন্য কয়েকজনের কাছে যাওযার পরও ফরম পাইনি। ঘোপ এলাকায় খুব কম গরীব দুঃস্থ ও অসহায় লোক পরিবার পরিচিতি ফরম পাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাবলু নাথের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, আমি মাত্র ৫৭৮ টি ফরম পেয়েছি। ৫-৭ হাজার পরিবারের মাঝে আমি মাত্র এই কয়টি কার্ড কাকে দেব আর কাকে দেবনা। তারপরও বলব অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখুন আমি মুখ চিনে দিয়েছি নাকি যারা পাওয়ার যোগ্য তাদেরকেই দিয়েছি। তাছাড়া আমি মানুষ কিছু ভুল ত্রুটি তো হতেই পারে।
গত ২ মার্চ যশোর জেলায় পরিবার পরিচিতি ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে। ফরম জমা দেয়ার শেষ তারিখ ৫ মার্চ। এরপর আর কোন ফরম জমা নেয়া হবে না। টিসিবির পণ্য তৃণমূল পর্যায়ের নি¤œ আয়ের মানুষের মাঝে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে (রোববার ২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে কালেক্টরেট সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত জরুরী সভায় একথা জানানো হয়। জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে আরো জানানো হয়, পরিবার পরিচিতি কার্ড নিতে হলে ইউনিয়ন পর্যায়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র যাচাই বাছাই করে ফরমে স্বাক্ষর দিলে কার্ড দেয়া হবে। বলা হয়, আগে টিসিবির পণ্য ঝিনাইদহ থেকে আনা হতো। এখন টিসিবির পণ্য আসবে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে। সেই পণ্য জেলা পর্যায়ে খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদফতরে গুদামে, উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা পরিষদের গুদামে মুজত রাখা হবে। সেখান থেকে সরকারের নমুনা সম্বলিত প্যাকেটে নিরাপদে প্যাকেট করা হবে। তারপর টিসিবির ডিলাররা সেগুলো কার্ডধারীদের মাঝে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করবেন।