জাহিদুল কবীর মিল্টন: বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) হিসাবেই যশোরে রেজিস্ট্রেশনকৃত থ্রি হুইলার বা অটোরিকশার সংখ্যা ৩৩০। এর বাইরে রেজিস্ট্রেশন বিহীন থ্রিহুইলার বা অটোরিকশা তিনগুণেরও বেশি। ফলে অটোরিকশা খাত থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় হচ্ছে প্রতিবছর তার চেয়েও বেশি রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার । টাকার অঙ্কে প্রায় ২ কোটি।
স্থানীয়রা বলছেন, ট্রাফিক বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে এসব অটোরিকশা চলাচল করছে যশোর শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন সড়কে। কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার কারণেই লাইসেন্সবিহীন অটোরিকশাগুলোকে আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না। তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) স্থানীয় কার্যালয় বলেছে, তারা লাইসেন্সবিহীন অটো রিকশাগুলোকে লাইসেন্সের আওতায় আনতে কাজ শুরু করেছে।
বিআরটিএ’র হিসাব অনুযায়ী, যশোরে লাইসেন্সধারী থ্রি হুইলার অটো রিকশার সংখ্যা ৩৩০ । এর বিপরীতে লাইসেন্স ছাড়াই যশোরের বিভিন্ন সড়কে চলছে প্রায় ১ হাজার অটোরিকশা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব অবৈধ গাড়ি নিবন্ধন ও লাইসেন্স পুনঃনিবন্ধন প্রক্রিয়ার আওতায় না আসায় সরকার প্রতিবছর রাজস্ব হারাচ্ছে ১ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন পেতে হলে ব্যাংকে জমা দিতে হয় সাড়ে ১১ হাজার টাকা। লাইসেন্স হলে নম্বর পাওয়ার পরে রুট পারমিটের (সড়কে চলাচলের অনুমতি) জন্য জমা দিতে হয় ১ হাজার ৬০০ টাকা। এ ছাড়া লাইসেন্স করতে জমা দিতে হয় ২ হাজার টাকা, ট্যাক্স টোকেন বাবদ দিতে হয় ৪ হাজার টাকা, ইনস্যুরেন্স বাবদ দিতে হয় ৪৭০ টাকা। সবমিলিয়ে নবায়নসহ প্রতিটি গাড়িতে রাজস্ব দাঁড়ায় ১৯ হাজার ৫৭০ টাকা। এই হিসাবে নবায়নের খরচসহ ৩৩০ টি গাড়ি থেকে রাজস্বের পরিমাণ দাঁড়ায় ৬৪ লাখ ৫৮ হাজার ১০০ টাকা। এর সব টাকাই আবার জমা দিতে হয় ব্যাংকে। ফলে এই লেনদেনের পুরোটাই সরকারি তহবিলে জমা হয়।
বিআরটিএ’র হিসাবের বাইরে সদরসহ আট উপজেলা শার্শা, ঝিকরগাছা, চৌগাছা, বাঘারপাড়া, মনিরামপুর, কেশবপুর, ও অভয়নগরে রেজিস্ট্রেশন বিহীন অটোরিকশা চলাচল করছে প্রায় ১ হাজার। সে ক্ষেত্রে সরকার প্রতি বছর রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে ১ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
বিআরটিএ যশোর সার্কেলের সহকারী পরিচালক মাহাফুজুর রহমান বলেন, বর্তমানে নিবন্ধিত গাড়ি (সিএনজিচালিত অটোরিকশা) রয়েছে ৩৩০ টি। নিবন্ধনের বাইরে রয়েছে আরও প্রায় ১ হাজার অটোরিকশা।
অনিবন্ধিত গাড়িগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনার বিষয়ে তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর থেকে নতুন করে রেজিস্ট্রেশন দেয়ার প্রক্রিয়াটি বন্ধ রয়েছে। জেলা শহরে আঞ্চলিক পরিবহন কমিটি এ সব থ্রিহুইলার ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন দেয়। এর প্রধান জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসক এই কমিটির সভাপতি। বিআরটিএর সহকারী পরিচালক সদস্য সচিব। এছাড়া পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা সদস্য। তবে নতুন রেজিস্ট্রেশনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবর একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি মিটিংও হয়েছে। আশা করছি, নতুন রেজিস্ট্রেশন প্রদান প্রক্রিয়া খুব শিগগিরই শুরু হবে।
অবৈধ থ্রিহুইলার ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচলে আইনগত কি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে মাহাফুজুর রহমান বলেন, এ গুলো হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক বিভাগ ও আইন প্রয়োগকারি সংস্থা ব্যবস্থা নেবে। বিআরটিএ শুধুমাত্র সচেতনা সৃষ্টির জন্য কাজ করে।