নিজস্ব প্রতিবদেক
যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্টহাউসে নারীসহ অবস্থানের ঘটনায় মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদিকে, রেস্টহাউসে দলবল নিয়ে হানা ও হাঙ্গামার অভিযোগে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা কমিটির সদস্য গোলাম হাসান সনিকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সোমবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক ওসমান গণি সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাজিদুর রহমান সাগর। এদিকে, ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মনজুর মোর্শেদ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা সনিকে বহিষ্কার সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকান্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যশোর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম হাসান সনিকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। দলের নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে কোন প্রকার যোগাযোগ না করার নির্দেশনা প্রদান করা হলো।
এ বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাজিদুর রহমান সাগর জানান, কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে সনিকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের যে কেউ দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করলে দলে জায়গা নাই।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুন স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্টহাউসে ওঠেন ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম। খবর পেয়ে যশোর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি দলবল নিয়ে সেখানে হানা দেন, হাঙ্গামা করেন। রেস্টহাউসের এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় মুখরোচক আলোচনার খোরাক হয়েছে।
সিসিটিভি ফুটেজ ও রেস্টহাউস কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ৩০ জুন সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পুরাতন রেস্ট হাউসের কপোতাক্ষ কক্ষে ওঠেন পার্শ্ববর্তী জেলা ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম। এর ঘণ্টা দুয়েক পরে পাঁচ-ছয়জন সহযোগী নিয়ে রেস্টহাউসে হাজির হন জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি। দরজায় ধাক্কা দিতেই বাইরে বেরিয়ে আসেন ওসি সাইফুল। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা কক্ষে প্রবেশ করতে গেলে বাধা দেন তিনি। একপর্যায়ে টেনেহেঁচড়ে ধস্তাধস্তি করে ওসিকে সঙ্গে নিয়েই কক্ষে প্রবেশ করেন তারা। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ছাত্রদল নেতা সনি ও সহযোগীরা ভাঙচুর চালান ও তাদের ভিডিও ধারণ করেন।
এ সময় আনসার সদস্য ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মচারীকে মারধরও করেন তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে হাজির হলে ওসি এবং ওই নারীকে পেছনের দরজা দিয়ে বের করে দেন ছাত্রদল নেতা সনি।
আরও পড়ুন: যশোরের ঐতিহাসিক ইমামবাড়িতে দুঃসাহসিক চুরি