শালিখা প্রতিনিধি: দেশে যখন উন্নয়নের জোয়ার বয়ছে, রাস্তা ঘাট ব্রিজ কালভার্ট সকল এলাকায় যখন উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে ঠিক সেই সময়ে মাগুরার শালিখা উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের বই খোলা গ্রামের একমাত্র রাস্তাটি সাড়ে তিন কি.মি. একেবারে কাঁচা। এ যেন রাস্তা নয় ধান রোপণের ক্ষেত।
গাড়ি তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটেও এ রাস্তা দিয়ে যাওয়া মুশকিল, প্রয়োজনের তাগিদে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামি ছাত্র-ছাত্রীসহ হাজারো গ্রামবাসীর। এমনই একটি অবহেলিত গ্রাম রয়েছে মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার শতখালী ইউনিয়নে।
বাড়ি ঘরে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও ওই গ্রামের রাস্তা রয়েছে একবারে অবহেলিত। ভোগান্তির পাশাপাশি বিপত্তির শিকার হতে হচ্ছে তাদের। রাস্তা বেহাল দশার কারণে গ্রামের অনেক মেয়ের বিয়ে নিয়েও পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। প্রসূতি নারীদের কষ্টের কথা বলার মত নয়। এমনকি অনেক সময় মৃত্যুমুখেও পড়েন অনেক প্রসূতি। মাত্র সাড়ে তিন কিলোমিটারের এই রাস্তা পাকা হওয়া তো দূরের কথা দীর্ঘদিনেও দেয়া হয়না এক ঝুড়ি মাটি।
এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন রাস্তাটি সংস্কার না করার কারণে বর্ষা মৌসুমে হাবড় (গভীর কাদা) পরিণত হয় ফলে একেবারে চলাচলের অনুপযোগি হয়ে যায়। রাস্তার পাশে যে সকল বাড়ি আছে সে সব বাড়ির উপর দিয়ে কোন রকম যাতায়াত করে ওই গ্রামের মানুষ। গ্রামের শেষ প্রান্তে প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত হওয়ার কারণে ছেলে মেয়েরা বর্ষা মৌসুমে কাদার কারণে স্কুলে যেতে পারেনা, অনেকে লেখা পড়া বাদ দিতে বাধ্য হয়।
চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীদের অবস্থা একই। বই খোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিতা রাণী বিশ্বাস বলেন, রাস্তাটির বেহালদশার কারণে আমার স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা সময় মত ক্লাসে হাজির হতে পারে না। ফলে লেখা পড়ার প্রতি তারা নিরুৎসাহিত হচ্ছে। স্কুলের ছাত্র ছাত্রী দিন দিন কমে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে স্কুলটি অদূর ভবিষ্যতে ছাত্র ছাত্রী শূন্য হয়ে যাবে।
গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধি আনোয়ার বিশ্বাস (৬১) ক্ষোভের সাথে বলেন, এই সরকারের আমলে সকলের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটলেও আমাদের বই খোলা গ্রামের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি। এই রাস্তার বেহাল দশার কারণে আমাদের গ্রামের মেয়েদের ভালো কোথাও বিয়ে হয় না, অসুস্থ হলে সঠিক সময়ে ডাক্তারের কছে যেতে পারিনা। ছেলে মেয়েরা ঠিকমত স্কুল, কলেজ ও মাদ্রসায় যেতে পারে না।
নির্বাচন আসলেই সকলে বলে এবার আপনাদের রাস্তা পাকা করে দেয়া হবে। কিন্তু পরে আর কোন খেঁজ থাকেনা জনপ্রতিনিধিদের। শতখালী ইউনিয়নের ওয়ার্ড মেম্বর আব্দুল মান্নান শিকদার বলেন, আমি এ বছর নতুন নির্বাচিত হয়েছি, আমি রাস্তাটির বেহাল দশা দেখেছি, চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে এই রাস্তাটি যাতে পাকা করা যায় সে ব্যাপারে চেষ্টা করছি।