জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি
চুয়াডাঙ্গার ভোর আজ যেন আরও একটু নিস্তব্ধ, আরও একটু কুয়াশাঘেরা। রাতভর উত্তরের হিমেল হাওয়া বইয়ে যাওয়ার পর সকালবেলায় সূর্য উঠলেও তার উষ্ণতা যেন আকাশেই হারিয়ে গেছে। চারপাশে কেবল ধূসর কুয়াশা আর কাঁপুন ধরানো ঠান্ডার ছোঁয়া। এই শীতে যেন পুরোটাই ঢেকে গেছে জেলার পথঘাট।
এই ঠান্ডার মাঝেই শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় আবহাওয়া অফিস যখন জানাল—চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা নেমেছে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, তখন স্পষ্ট হলো—এটাই এই মৌসুমের সবচেয়ে শীতল সকাল। রাস্তায় বের হলেই অনুভব করা যায় সেই হাড়কাঁপানো বাস্তবতা।
দিনমজুর, রিকশাচালক, চা-দোকানি—প্রতিদিনের জীবিকার সন্ধানে যারা ভোরেই রাস্তায় নামেন, তাদের মুখের কথায় আজ একটাই সুর—‘শীতটা আজ একটু বেশি।’ কুয়াশায় ঢাকা সড়কে হাত পকেটে ঢুকিয়েও ঠান্ডাকে থামানো যাচ্ছে না। কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে আগুন পোহানোর ছোট ছোট আসর; তবু দগদগে কাঠের আগুনের তাপও যেন খুব বেশি দূর যাচ্ছে না।
বেলা বাড়লেও সূর্যের তাপ ছিল নগণ্য। কুয়াশার চাদরে আচ্ছাদিত আকাশের নিচে পুরো জেলাজুড়ে যেন এক বিষণ্নতার আবহ। শীতের দাপটে ব্যাহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম। শিশুরা ঘর থেকে বেরোতে চাইছে না; বৃদ্ধরা শীত নিবারণী কাপড়ে একের পর এক স্তর যোগ করছেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারাদেশেই অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ শুষ্ক আবহাওয়া থাকতে পারে। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশা আরও ঘন হতে পারে। রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিতই থাকবে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, “আজ সকাল ৯টায় রেকর্ড করা তাপমাত্রা—১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস—এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন। বাতাসের আর্দ্রতা ৮১ শতাংশ থাকায় ঠান্ডার অনুভূতি আরও বেশি লাগছে।”
চুয়াডাঙ্গার শীতে এমন সকাল অনেকের কাছে পরিচিত হলেও তীব্রতা যেন এ বছর একটু আগেই নেমে এসেছে। শহরের চায়ের দোকানে উষ্ণ কাপে ভর করে মানুষ জড়ো হয়েই বলছে—“শীত শুরু তো হলো, এখনই যদি এমন হয়, সামনে কী হবে!”
