কল্যাণ ডেস্ক
আগের দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সেলফি। পরদিন বঙ্গবন্ধুকন্যার সঙ্গে কথা বলতে হাঁটু গেড়ে বসলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। সেলফির পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান প্রদর্শনের বিরল এই ছবিও।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, চেয়ারে অসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সঙ্গে আলাপ করছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। তবে কথা শুরুর আগে তিনি নিজেকে নামিয়ে আনেন উপবিষ্ট বঙ্গবন্ধুকন্যার উচ্চতায়। কাজটি করতে গিয়ে তিনি বাঁ পায়ের হাঁটু গেড়ে বসেন, আর পাদুকাহীন ডান পা-টা শরীর থেকে খানিকটা এগিয়ে রাখেন। ইষৎ অবনত ভঙ্গিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছাকাছি পৌঁছাতে বাম হাতে ধরে রাখেন তার চেয়ার।
এক দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে অন্য দেশের সরকারপ্রধানের শুভেচ্ছা বিনিময়ের এই দৃশ্য বিরল। অনেকে এটিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য বিশেষ সম্মান হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ছবি শেয়ার করে গর্বের কথা তুলে ধরেছেন রাজনৈতিক, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
জি-২০ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে রবিবার দিল্লির রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি সম্মান জানাতে যান বিশ্বনেতারা। সেখানে শেখ হাসিনা-ঋষি সুনাকের শুভেচ্ছা বিনিময়ের মুহূর্তটি ধরা পড়ে ক্যামেরার লেন্সে।
বিষয়টি নিয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তার ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের পথে লন্ডনের ঐতিহাসিক ১০নং ডাউনিং স্ট্রিট এ গিয়েছিলেন। সে সময়ের বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার এডওয়ার্ড হীথ, স্বাধীন বাংলাদেশের জাতির পিতা কে বহনকারী গাড়ীর দরজা খুলে বঙ্গবন্ধুর প্রতি এক বিরল সম্মান প্রদর্শন করেছিলেন। বর্তমানে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সাথে বঙ্গবন্ধুকন্যার আজকের এই ছবিটি মনে করিয়ে দেয় সেদিনের ঐতিহাসিক সেই ঘটনা।
‘এই সম্মান ও ভালোবাসা অর্জন করে নিতে হয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অসামান্য অগ্রগতি এবং শান্তি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার যে উদাহরণ বিশ্বরাজনীতিতে তৈরি করেছেন, তারই প্রতিফলন এই দৃশ্য।’
সাদিয়া অরিন নামে এক সংবাদকর্মী নিজের পোস্টে ছবি শেয়ার করে লেখেন, ‘টাইমলাইনে থাক। সারা বিশ্বের বিস্ময়।’ সাংবাদিক ইকবাল করিম নিশান লিখেছেন, ‘জগতটা আসলে পাঠশালা…।’
আগের দিন এই সম্মেলনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সেলফি-বন্দি হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রগতি ময়দানের ভারত মন্ডপম আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী কেন্দ্রে তারা একে অপরকে শুভেচ্ছা জানান।
প্রধানমন্ত্রী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হাসিমুখে কিছুক্ষণ কুশল বিনিময় করেন। এ সময় সেখানে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কন্যা, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের থিম্যাটিক অ্যাম্বাসেডর এবং অটিজম অ্যান্ড নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ। তিনি পরে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে তোলা বেশ কয়েকটি ছবি আপলোড করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকেও এসব ছবিতে দেখা যায়।
সায়মা ওয়াজেদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) লেখেন, ‘নয়াদিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে জো বাইডেনের সঙ্গে চমৎকার আলাপ হয়েছে। আমি তাকে সমন্বিত মানসিক স্বাস্থ্যসেবার অংশ হিসেবে জনস্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থায় বিদ্যালয় মনোবিজ্ঞানীর প্রয়োজনীয়তার গুরুত্বের কথা বলেছি।’