নিজস্ব প্রতিবেদক
ককটেল, পেট্রলবোমা, ধারালো অস্ত্রসহ আটক যুবদল নেতা মাসুদ আল রানা এবার ব্যবসায়ী নেতা হত্যা মামলায় আটক হতে যাচ্ছেন। গত ১৭ মার্চ যশোর শহরে বাড়ির ভেতরে গুলি করে ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় যশোর মুজিব সড়ক ভিআইপি মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রেল বাজারের ইজারাদার মীর সামির সাকিব সাদিকে। এ হত্যায় যুবদল নেতা মাসুদ আল রানা কিলারদের অর্থ দেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে।
মীর সামির সাকিব সাদিকে হত্যার জন্য যুবদল নেতা মাসুদ আল রানা নিজ দোকানে বসে স্থানীয় সন্ত্রাসী তুহিনের হাতে ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। ওই টাকা পেয়ে তুহিন তার সঙ্গে ট্যাটু সুমন, মেহেদী হাসান অনিকসহ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির মধ্যে ঢুকে মীর সাদিকে গুলি ও ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।
ওই হত্যা মামলার আসামি ট্যাটু সুমন তার জবানবন্দিতে টাকা দেওয়ার কথা উল্লেখ করেছে। তারপর তেকেই পুলিশ মাসুদ আল রানাকে খুঁজছিল।
গত মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) যৌথবাহিনীর সদস্যরা যশোর শহরের চাঁচড়া রায়পাড়ার বাড়ি থেকে যুবদল নেতা মাসুদ আল রানাকে আটক করে। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ককটেল, পেট্রলবোমা ও ধারাল অস্ত্র।
মাসুদ আল রানা যশোর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক, তার বাবার নাম নজরুল ইসলাম।
সাদি হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যশোর কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশনস) মমিনুল হক জানিয়েছেন, আসামি মাসুদ আল রানার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে। এ মামলায় তিনি কারাগারে। একই সঙ্গে সাদি হত্যা মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
তিনি জানান, চলতি বছরের ১৭ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাড়িতে ফিরছিলেন সাদি। মোটরসাইকেলে সাদির চাচাতো ভাই মীর রাকিব হাসানও ছিলেন। ওই সময় বাড়ির মধ্যে ঢুকে সাদিকে লক্ষ্য করে প্রথমে গুলি এবং পরে ধারাল অস্ত্র দিয়ে বুক ও পিঠে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আসামিরা পালিয়ে যায়। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও সাদি আগেই মারা যান।
তার মা কামরুন্নাহার এ ঘটনায় ট্যাটু সুমন ও মেহেদী হাসান অনিকের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩-৪ জনের নামে মামলা করেন।
এদিকে দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকার পর আসামি ট্যাটু সুমন ও মেহেদী হাসান অনিক পুলিশি গ্রেফতার এড়িয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশ জানতে পেরে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে রিমান্ডের আবেদন জানায়। রিমান্ডে ট্যাটু সুমন হত্যার রহস্য পুলিশকে জানায়। এরপর সে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
জবানবন্দিতে সুমন জানায়, সাদির সঙ্গে যুবদল নেতা মাসুদ আল রানার ব্যবসা নিয়ে বিরোধ ছিল। সেই কারণে সাদিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন রানা। মার্চ মাসে রোজার মধ্যে সন্ত্রাসী তুহিনকে দোকানে ডাকেন রানা। একপর্যায়ে তাকে ২০ হাজার টাকা দেন। তুহিন তার সঙ্গে ট্যাটু সুমন, মেহেদী হাসান অনিক ও বেশ কয়েকজনকে নিয়ে ১৭ মার্চ সন্ধ্যা থেকে সাদির খোঁজ নিতে থাকে।
ওই রাতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শেষে সাদি তার ভাই রাকিবের সঙ্গে মোটরসাইকেলে বাড়িতে ফেরেন। মুজিব সড়কে পঙ্গু হাসপাতালের পাশের গলির কাছে আগে থেকেই তুহিন, সুমন, মেহেদী হাসানসহ কয়েকজন লুকিয়ে ছিল। বাড়ির সামনে ছিল আরও কয়েকজন। সাদি যখন বাড়ির মধ্যে ঢোকেন, সেই সময়ই গুলি করা হয়। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুক ও পিঠে আঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যায়। এরপর হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে সাদির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয় মাসুদ আল রানাকে।
ইন্সপেক্টর মমিনুল হক জানিয়েছেন, মাসুদ আল রানাকে এ হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে। কী উদ্দেশ্য, কেন সাদিকে হত্যা করা হলো- তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রহস্য উদঘাটন হবে বলে তিনি জানান।
সর্বশেষ
- বিসিবির নতুন অফিস হবে খুলনায় : বুলবুল
- ঢাকা থেকে গ্রেফতার যশোর যুবলীগ নেতা ‘টাক মিলন’
- মনিরামপুরে গভীর রাতে ভয়াবহ ডাকাতি
- না ফেরার দেশে অশোক কুমার রায়
- যশোরের চৌগাছা সীমান্তের হাওর থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
- হাদির মরদেহ ঢাকায়; আগামীকাল জানাজা ও দাফনের সিদ্ধান্ত
- প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের পাশে আছে সরকার— প্রধান উপদেষ্টার আশ্বাস
- কুষ্টিয়ায় প্রথম আলো অফিসে ভাঙচুর
