নিজস্ব প্রতিবেদক, মনিরামপুর
যশোরের মনিরামপুরের নাগোরঘোপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঢুকে প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধান শিক্ষক সন্তোষ পালকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে। এ সময় শিক্ষক সন্তোষ পাল জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। একই সাথে চেয়ারম্যানের সাথে থাকা কয়েকজন অনুসারী বিদ্যালয়ের পাশের সুমন রায় নামে এক দোকানিকে বেধড়ক পিটিয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।
শনিবার দুপুরে বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে ঘটনাটি ঘটেছে। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেনে চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন।
শিক্ষক সন্তোষ পাল বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে। কয়েকদিন আগে এলাকার ২-৩ যুবক এসে আমার কাছ থেকে খসড়া ভোটার তালিকা নিয়ে গেছেন। শনিবার বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ছিলেন না। দুপুর ১টার দিকে আলমগীর চেয়ারম্যান বেশ কয়েকজন অনুসারীকে নিয়ে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় আমার কাছে তিনি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা চান। তালিকা আমার কাছে না থাকায় দিতে পারিনি। এ সময় চেয়ারম্যান আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। একপর্যায়ে তিনি আমাকে চেয়ার ছুড়ে ও হাঁতুড়ি দিয়ে মারতে উদ্বত হন।
সন্তোষ পাল বলেন, আমি উচ্চ রক্তচাপের রোগী। চেয়ারম্যানে আচরণে প্রেসার বেড়ে যাওয়ায় স্কুলে আমি জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যাই। পরে লোকজন আমাকে ধরে বাড়িতে নিয়ে যান।
এদিকে মারপিটের শিকার সুমন রায় বলেন, চেয়ারম্যান লোকজন নিয়ে স্কুলে হট্টোগোল করায় সময় আমি মোবাইল ফোনে একটি কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধির সাথে কথা বলছিলাম। দূর থেকে চেয়ারম্যানের লোকজন দেখে ভেবেছেন আমি হয়তো পুলিশে খবর দিচ্ছি। তখন তারা ৩-৪ জন এসে মোবাইল চাইলে আমি দেয়নি। এজন্য চেয়ারম্যানের লোকজন আমাকে খুব মেরেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাগোরঘোপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নির্বাচনে দুটি পক্ষ প্যানেল দিয়ে ভোট করতে চাচ্ছে। চেয়ারম্যান আলমগীর একটি পক্ষকে সমর্থন দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, আমি নিজে স্কুলের ভোটে কোনো প্রার্থী হচ্ছি না। আমার সমর্থনে একটি পক্ষ আছে। আজ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা আনতে গিয়েছিলাম। সহকারী প্রধান শিক্ষককে কোন লাঞ্ছিত করা হয়নি।
মনিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) প্রসেনজিৎ ম-ল বলেন, ওসি স্যারের নির্দেশে আমি নাগোরঘোপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। চেয়ারম্যান কোনো শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেছেন এমন খবর জানতে পারিনি। তবে চেয়ারম্যান স্কুলে ঢুকে উচ্চবাচ্চ্য করেছেন এমনটি জানতে পেরেছি। শুনেছি, সহকারী প্রধান শিক্ষক সন্তোষ পাল তখন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, এই বিষয়ে লিখিতভাবে কেউ অভিযোগ দেয়নি।
