এম এ রাজা, নড়াইল থেকে ফিরে
শেখ কামাল অনূর্ধ্ব-১৮ ক্রিকেটের খুলনা বিভাগীয় প্রতিযোগিতায় টানা তৃতীয় জয়ে আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল যশোরের। তাই বৃহস্পতিবার গ্রুপের শেষ ম্যাচটি শুধু আনুষ্ঠিকতায় রূপ নেয়। আনুষ্ঠানিকতার এ ম্যাচটি জিতে সেমিফাইনালের আগে নিজেদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিতে চেয়েছিল আসাদুল্লাহ খান বিপ্লবের শিয্যরা। সেই পরিকল্পনায় দারুণভাবে সফল হয়েছে তুষার ইমরান-সৈয়দ রাসেলের উত্তরসূরিরা। অনূর্ধ্ব-১৬ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় দলীয় অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিমকে ছাড়াই চুয়াডাঙ্গাকে হারিয়েছে যশোর।
নড়াইল জেলা স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে ১৬১ রান করে যশোর। মাঝারি এই পুঁজিতে যশোরকে ২২ রানের জয় এনে দেন বোলাররা। তবে পুরো ম্যাচে তামিমের অভাববোধ করেন দলের টিম ম্যানেজমেন্ট। কেননা দলকে এক ম্যাচ হাতে রেখে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে ব্যাট-বলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তামিম।
এদিন সকালের গা গরমে অনুশীলনে দুঃসংবাদ পায় যশোরের টিম ম্যানেজমেন্ট। পায়ের পেশীতে টান পড়ে দলীয় অধিনায়ক তামিমের। ঠিক মতো হাটতেও পারছিলেন দলের সেরা তারকা। তাই নিজেকে ম্যাচ থেকে সরিয়ে নেন। তামিম না থাকায় আদ্রিব জামান বর্ণ টস করতে নামেন। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন।
তামিম না থাকায় বেশিভাগ সময় মিডল অর্ডারে ব্যাট করা সোহানুর ও গত তিন ম্যাচে সুযোগ না পাওয়া আবেদকে ওপেনিংয়ে পাঠানো হয়। দুজনে দলকে খুব বেশি দূর এগিয়ে নিতে পারেননি। দলীয় ১৬ রানেই সাজঘরে ফিরে যায় আবেদ। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রাকিবুল রনিকে নিয়ে সোহানুর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। তবে দুজনের জুটি ৩৯ রানের বেশি স্থায়ী হয়নি। সোহান ৩৫ বলে এক চারে ১৮ রানে সাজঘরে ফিরলে ভাঙ্গে এ জুটি। পরের ৩ রানের মধ্যে আরও দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যশোর। অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া বর্ণ ছয় বলে কোন রান না করেই ফেরেন। রকিবুল রনি ৩৫ বলে ৪টি চার ও একটি ছয়ে ২৮ রান করেন। পরের দিকে রাহাত পারভেজ ও মৃদুল বিশ^াসের ২০ ছাড়ানো ও সাদমানের এক চার ও ছয়ে ৯ বলে ১২ রানের ইনিংসে ৪৬ ওভারে ১৬১ রান করতে পারে যশোর। রাহাত পারভেজ ৩২ বলে দুই চারে ২৭ ও মৃদুল বিশ^াসের ৪০ বলে ২চারে অপরাজিত ২৪ রান করেন। বল হাতে চুয়াডাঙ্গার আলিফ ও শাকিল তিনটি করে উইকেট দখল করেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু পায় চুয়াডাঙ্গা। প্রথম ১০ ওভারে এক উইকেট হারিয়ে ৪৩ রান করে। গত তিন ম্যাচে দারুণ নিয়ন্ত্রিত বল করা বাঁহাতি পেসার রাহুল এদিন লাইন লেন্থই খুঁজে পায়নি। এসময় বেশ কয়েকটি ওয়াইড করেন রাহুল। তবে আরএক প্রান্তে ডানহাতি পেসার সাদমান উইকেট নেয়ার সাথে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করছিলেন। ১০ ওভারের পেস বোলিং কোটা পূরণের জন্য দলের তৃতীয় পেসার না থাকায় রাহুলকে পরিবর্তনও করতে পারছিলেন না দলীয় অধিনায়ক।
১০ ওভার পরে স্পিনাররা বোলিং আক্রমণে আসলেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে চুয়াডাঙ্গা। শেষ পর্যন্ত ৪৪ ওভার ৫ বলে ১৩৯ রান করতে পারে তারা। তাদের ব্যাট হাতে নিশান ৩৫ ও কৌশিক দে ১৯ রান করেন। যশোরের ডানহাতি অফস্পিনার মুকিম বিশ্বাস ৭ ওভার ৩ বলে ৩টি মেডেনসহ ১৫ রানে ৪টি, মৃদুল ২৩, সাদমান ১৫ ও সৈকত বিশ্বাস ২৬ রানে ২টি করে উইকেট দখল করেন। মৃদুল ১০ ওভারে ২৩, সাদমান ৬ ওভারে ২টি মেডেনসহ ১৫ ও সৈকত ১০ ওভারে তিনটি মেডেনসহ ২৬ রান দেন।