নিজস্ব প্রতিবেদক
নাজনীন নাহার তিশা নামে এক নারীর বিরুদ্ধে অব্যাহত ব্লাকমেইল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে অর্থবাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ তোলা হয়েছে একটি সংবাদ সম্মেলনে।
যশোরের বারান্দী মাঠপাড়ার ওই নারীর বিরুদ্ধে ব্লাকমেইল করে তিন লাখ টাকা হাতানো ও মিথ্যা মামলা দিয়ে বাঁধন নামে নালিয়া চাঁদপাড়ার এক যুবককে জেলে পাঠানোর অভিযোগ তোলা হয়েছে। ১৩ মে প্রেসক্লাব যশোরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী বাঁধনের মা নাছিমা খানম এসব অভিযোগ করেন।
এসময় তিনি যশোর কেতোয়ালি থানার এসআই দেবাশীষের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ তোলেন। নাছিমা খানমের দাবি, তিশার মিথ্যা মামলা দেয়ার আগেই তিশার বিরুদ্ধে ব্লাকমেইল সংক্রান্ত পরপর দুটি অভিযোগ দেয়া হয় থানায়। ওই অভিযোগ তদন্তের নামে প্রহসন করেন এসআই দেবাশীষ। তিনি অজ্ঞাত কারণে তিশার পক্ষ নিয়ে তার ছেলেকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্রে জড়িত হন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, গত ১০ মে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে অফিসে কর্মরত থাকা অবস্থায় এসআই দেবাশীষ তুলে থানায় নিয়ে যান নালিয়ার মোহাম্মদ আলী মামুনের ছেলে নাহিদ হাসান বাঁধনকে । বারান্দী মাঠপাড়ার নাজনীন নাহার তিশার দেয়া মামলায় তাকে আটকও দেখানো হয়। পরে তাকে আদালতে চালান করা হয় এবং বাধন এখন জেলখানায় রয়েছে সেরেফ মিথ্যা ও সাজানো ঘটনায়।
বাঁধনের মা নাছিমা খানম সংবাদ সম্মেলনে জানান, লেখাপড়া করার সময় তার ছেলের সাথে পরিচয় হয় তিশার। পরিচয় সূত্র ধরে বাঁধনের সাথে কথা বার্তা ও দেখা সাক্ষাত করতো। এই তিশা সঙ্গবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে টাকা পয়সার বিনিময়ে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হয়। সে বিশেষ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও কৌশলে ধারন করে রাখে এবং ব্লাক মেইল করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়। কেউ টাকা পয়সা দিতে অস্বীকার করলে তিশা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করার হুমকি দেয়। আর হুমকিতে কাজ না হলে ভুক্তভোগীদের বাসায় তার ভাড়া করা গুন্ডা নিয়ে ওঠে এবং বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। বিয়ের পর ডিভোর্সের নামে মোটা অংকের টাকা উসুল করে। কমপক্ষে দশ লাখ টাকা হাতানোর করার টার্গেট থাকে। এমনই এক ঘটনায় ফেঁসে যায় তার ছেলে বাঁধন । তিশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ছেলে তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে। আর শুরু হয়ে যায় বাধনকে ব্লাকমেইল করা। বাধনের কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে তার সম্মানহানী ও চাকরিচ্যুত করার হুমকি দিতে থাকে। আর টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তিশা তার সহযোগী ইকরামুলকে দিয়ে তুলে নিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। আর ১শ’ টাকা করে তিনটি ব্লাংক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এরপরে বাধনের কাছ থেকে ব্লাকমেইল করে বিকাশ এবং নগদ ক্যাশসহ বিভিন্নভবে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এসব ঘটনা নিয়ে বাঁধননের পরিবারের পক্ষে থানায় দ্’ুদফা তিশার ও তার চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে এসআই দেবাশীষ ওই ব্লাকমেইল চক্রের হোতা তিশার পক্ষ নেন। তিনি বাধনের পরিবারের দেয়া অভিযোগে কর্ণপাত না করে তিশাকে উল্টো বানোয়াট মামলা দিতে প্ররোচনা দেন এবং ওই মামলায় বাধনকে আটক করে নিয়ে আসেন। ওই প্রতারক চক্রে এসআই দেবাশীষ জড়িত রয়েছে বলেও দাবি বাঁধনের মায়ের।
মামলা দেয়ার আগে ওই তিশা গত ১ মে রাত ১০ টার দিকে বাঁধনের পরিবারের লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, এমনকি এক নারীকে মারপিটও করে যায়। এছাড়া ধর্ষন মামলা দেবে বলেও হুমকি দেয়। এসব হুমকির ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় গত ২৮ মার্চ ও ২ মে দুটি অভিযোগ করা হয়। এতে কোনো আইনী প্রতিকার পাননি বাঁধন ও তার পরিবারের সদস্যরা। এসআই দেবাশীষ ব্লাকমেইল চক্রের হোতা তিশার পক্ষ নিয়ে কলকাটি নেড়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: যশোরের চিহ্নিত সন্ত্রাসী আকাশকে অস্ত্র মামলায় ১৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড