মনিরামপুর ও নেহালপুর প্রতিনিধি
অপমান সইতে না পেরে রহিমা বেগম (৩৬) নামে এক বিধবা নারীর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দিবাগত রাত ৪ টার দিকে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার পোড়াডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় নিহতের ভাই আব্দুল্লাহ মনিরামপুর থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ এ ঘটনায় বরুণ দত্ত নামে এক যুবককে আটক করেছে। রহিমা বেগম পোড়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত এহসানুল ফকিরের স্ত্রী এবং আটক বরুণ দত্ত একই গ্রামের রবীন্দ্রনাথ দত্তের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, ঘটনার দিবাগত রাতে রহিমা’র ঘর থেকে বরুণ দত্তকে স্থানীয়রা আটক করে। এসময় বরুণসহ ওই বিধবা নারীকে মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে বরুণকে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্তার হোসেন ও গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর হোসেন জিম্মায় নেয়। অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে বরুণকে সারা রাত আটকিয়ে রাখা হয় আওয়ামী লীগ নেতা আক্তারের বাড়িতে। অপরদিকে রহিমাকে রাখা হয় তার নিজ বাড়িতে।
এদিকে রোববার ভোরে রহিমাকে ডাকাডাকি করলে সাড়া না পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঝুলান্ত অবস্থায় দেখতে পায় ওই নারীকে স্থানীয়রা। পরে বিষয়টি নেহালপুর পুলিশ ফাঁড়িতে জানায় গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর হোসেন।
রাতের ওই ঘটনা ধাপাচাপা দিতে একটি মহল বরুণের পরিবারের সাথে দেনদরবার শুরু করে। অবশ্য, রহিমার মৃত্যুর খবর শুনতেই বরুণকে ছেড়ে দেয় চক্রটি।
স্থানীয়রা দাবী করছে, অপমান সইতে না পেয়ে রাতের কোন এক সময় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে রহিমা। রোববার সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর মর্গে প্রেরণ করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন মোড়ল জানান, গভীর রাতে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান বরুণকে ওই বিধবার ঘর থেকে বের করা হচ্ছে। পরে বরুণকে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্তার হোসেনের বাড়িতে সারা রাত আটকিয়ে রাখা হয়। ভোরে জানতে পারেন ওই নারী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, বরুণ দত্তকে ওই নারীর ঘর থেকে বের করার পর থানা পুলিশে খবর দেয়ার কথা তার স্মরনে ছিল না। বিষয়টি ভূল হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
স্থানীয় আওয়ামীলীগের সভাপতি আক্তার হোসেন মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি গোপনে মিমাংসার জন্য বরুণকে নিজ বাড়িতে আটকিয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু পরে যখন জানতে পারেন ওই নারী আত্মহত্যা করেছে, তখন স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেয়া হয়।
রহিমার ভাই আব্দুল্লাহ বিশ্বাস দাবি করেছেন, তার বোন রহিমাকে মারধর করা হয়েছে। মনিরামপুর থানায় অভিযোগ করেছি।
মনিরামপুর থানার ওসি শেখ মনিরুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। বরুণ দত্ত (২৮) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। রহিমার লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।