নিজস্ব প্রতিবেদক
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কুয়াকাটায় নিয়ে অভয়নগরের এক নারীকে দফায় দফায় ধর্ষণ ঘটনায় আটক শংকরপুরের শেখ এহসান আহমেদ ফয়সালকে মুক্ত করতে নানামুখি দৌড়ঝাঁপ চলছে। এখানেই শেষ নয়, ফুঁসলিয়ে ওই নারীকে যশোরের শংকরপুরের বাসায় ডেকে ফের ধর্ষণ ও মারপিট করার ঘটনাও ঘটিয়েছিল অভিযুক্ত। এত কিছুর পরও ধর্ষকের পরিবারের পক্ষে মেয়ে পরিবারের সাথে লোক মাধ্যমে নানামুখি চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এছাড়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করতেও অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলেও তথ্য মিলেছে।
এদিকে ভুক্তভোগী নারী ফয়সালের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা মিনারা আলমের দাবি, মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। যথাযথ তদন্ত হবে এবং ভুক্তভোগী প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তা তার কাছ থেকে পাবেন।
যশোর কোতোয়ালি থানায় দেয়া মামলা ও সূত্র থেকে তথ্য মিলেছে, ৮ মাস আগে শংকরপুর চোপদারপাড়ার শেখ শামীম আহমেদ মানুয়ার ছেলে পুলিশের হাতে আটক শেখ এহসান আহমেদ ফয়সাল (২৫), অভয়নগর এলাকার এক নারীর (২৩) সাথে ফেসবুকে পরিচয় গড়ে তোলে। পরিচয়ের একপর্যায়ে কৌশলে তার মোবাইল নম্বর নেয়। তারপর থেকে তার হোয়াটসঅ্যাপে কল দিত। কিছুদিন পরে ফয়সাল প্রেমের প্রস্তাব সহ কু-প্রস্তাব দেয়। ওই নারী রাজী না হওয়ায় সে বিয়ের প্রলোভন দিতে থাকে। এরপর কুয়াকাটা ঘুরতে নিয়ে যাবে বলে গত বছরের ২৯ নভেম্বর মণিহার সিনেমা হলের সামনে থেকে পরিবহনে রওনা করে। কুয়াকাটা নিয়ে একটি হোটেলে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে সেখানে ৩ রাত্রিযাপন করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক দফা ধর্ষণ করে। কুয়াকাটা থেকে খুলনায় নিয়ে সোনাডাঙ্গার একটি হোটেলে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এরপর থেকে বিয়ের কথা বললে ফয়সাল বিয়ে করবে না বলে জানায়। গত ১২ মে বিকেল ৩ টায় ফোন দিয়ে ওই নারীকে দেখা করতে বলে ফয়সল। পরিবারের লোকজনের সাথে দেখা করিয়ে দেবে এবং বিয়ে করবে বলে ১৩ মে দুপুর ১ টার সময় শংকরপুর চোপদারপাড়ায় ফয়সাল তার বাসায় নিয়ে যায় ওই নারীকে। সেখানেও একাধিকবার ধর্ষণ করে। এসময় বিয়ের কথা বললে ওই নারীকে খুন জখমের হুমকি দিয়ে মারপিট করে ফয়সাল। প্রাণে বাঁচার জন্য ফয়সালের ঘর থেকে দৌঁড়ে পালিয়ে থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। এরপর ওই দিন সন্ধ্যায় মণিহার সিনেমা হলের সামনে থেকে ফয়সালকে পুলিশ আটক করে। আর আটকের পর থেকে তাকে মুক্ত করতে নানামুখি দৌড়ঝাঁপ করছে ফয়সালের পরিবারের সদস্যরা। এছাড়া মামলার তদন্ত প্রতিবেদন পক্ষে নেয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করা হচ্ছে, এমনকি ওই নারীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে নানামুখি চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। এমনকি মামলা তুলে নিলে তাকে বিয়ে করবে বলেও নতুন করে ফন্দি আটা হচ্ছে বলেও অভিযোগে প্রকাশ।
এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মিনারা আলম জানিয়েছেন, মামলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের আসামি ফয়সালকে আটক করে ধর্ষণ মামলায় চালান করা হয়েছে। সে জেল হাজতে আছে। মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। যথাযথ তদন্ত হবে এবং ভুক্তভোগী প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তা তার কাছ থেকে পাবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন থানার এসআই মিনারা আলম।