নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের অভয়নগরে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যা মামলায় জহুরুল ইসলাম ওরফে বাবু নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। অভয়নগর থানার এসআই গোলাম হোসেন তদন্ত শেষে আদালতে এ চার্জশিট জমা দেন। অভিযুক্ত জহুরুল ইসলাম বাবু সদর উপজেলার জগন্নাথপুর বিশ্বাসপাড়ার মশিউর রহমানের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, অভয়নগর উপজেলার সিদ্দিপাশা গ্রামের শেখ মুজিবর রহমানের মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন বিথিকে ১১ বছর আগে বাবু বিয়ে করেন। বাবু মাদকসেবী ছিলেন। সংসার জীবনে তাদের দুটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। বড় মেয়ের নাম সুমাইয়া আক্তার ও ছোট মেয়ের নাম সাফিয়া আক্তার। বিয়ের পর হতে যৌতুকসহ বিভিন্ন অযুহাতে স্ত্রী বিথিকে মারধর করা শুরু করে বাবু। বাধ্য হয়ে গত বছরের জুনে বাবুকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা দেন শেখ মুজিবর রহমান। তারপরও বিভিন্ন সময় মাদকসেবন করে সাবিনাকে মারপিট করে।
এক পর্যায় গত পহেলা মে বাবু তার স্ত্রী ও দুই কন্যাকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে আসেন। এরপর গত ১৫ জুলাই শ্বশুর বাড়িতে এসে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন বাবু। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নওয়াপাড়া থেকে মাহেন্দ্র গাড়িতে করে চেঙ্গুটিয়ায় যাওয়ার পথে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়।
এরপর চেঙ্গুটিয়ায় গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেটে জগন্নাথপুর গ্রামে যাওয়ার পথে চাপাতলা গ্রামের নুর ইসলামের কলাবাগানের পাশে নিয়ে স্ত্রী বিথিকে গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এ সময় বড় মেয়ে সুমাইয়া চিৎকার করলে বাবু তাকেও গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
ছোট মেয়ে সাফিয়া কান্নাকাটি করলেও তাকে একইভাবে হত্যা করেন। পরে তাদের লাশ সেখানে রেখে জগন্নাথপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে চলে যান বাবু। বাড়িতে গিয়ে বাবু তার ভাই মঞ্জুর বিশ্বাসকে স্ত্রী ও মেয়েদের হত্যা করার কথা জানান। মঞ্জুর বিশ্বাস তাৎক্ষণিক ঘটনাটি বসুন্দিয়া ক্যাম্পের পুলিশকে জানান।
এ খবর পেয়ে পুলিশ এসে বাবুকে আটক করে। পরে ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত বিথির পিতা শেখ মুজিবর রহমান অভয়নগর থানায় একটি মামলা করেন।