নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের অভয়নগর উপজেলার পাথালিয়া গ্রামের গৃহবধূ মনজুরা বেগম হত্যা মামলায় স্বামী আব্দুস সেলিমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। সোমবার যশোরের অতিরিক্ত দায়রা জজ তাজুল ইসলাম এই রায় প্রদান করেন।
অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. মো. আসাদুজ্জামান জানান, আসামি আব্দুস সেলিমের আদালতে উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন বিচারক। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ৬ মে পাথালিয়ার গ্রামের আব্দুর রহমানের পুকুর থেকে একই গ্রামের আব্দুস সেলিমের স্ত্রী মনজুরা বেগমের লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই অভয়নগরের পায়রা গ্রামের বাসিন্দা কবির হোসেন অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, ২০০৪ আব্দুস সেলিমের সাথে তার বোন মনজুরা বেগমের বিয়ে হয়। এক সন্তানের জন্মের পর তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। বিচ্ছেদের কয়েকদিন পর আব্দুস সেলিম একই গ্রামের রিক্তা নামের আরেক মেয়েকে বিয়ে করেন। এরপর আব্দুস সেলিম পুনরায় মনজুরা বেগমকে বিয়ে করার জন্য তাদের বাড়িতে যান। পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়। পরে সন্তান ও স্ত্রীকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন আব্দুস সেলিম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী রিক্তা পিতার বাড়িতে চলে যান। তিনি আব্দুস সেলিমের বিরুদ্ধে পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। এসব বিষয় নিয়ে আব্দুস সেলিম ও মনজুরা বেগমের মধ্যে গোলাযোগ চলছিলো। এরই মধ্যে ২০০৬ সালের ৬ মে ভোরে পুকুরে মনজুরা বেগমের লাশ পাওয়া যায়।
এদিকে পুলিশ মামলা তদন্তকালে জানতে পারে, শ্বাসরোধে মনজুরা বেগমকে হত্যা করেছেন আব্দুস সেলিম। হত্যার পর ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে মনজুরা বেগমকে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রচার চালান আব্দুস সেলিম। এরপর পুলিশ আব্দুস সালামকে আটক করলে তিনি স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এরপর ২০০৭ সালের ৮ মে আদালতে চার্জশিট জমা দেন পুলিশের এসআই জসিম উদ্দিন। ওই মামলায় আসামি আব্দুস সেলিমের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে উল্লিখিত সাজা প্রদান করেন।