নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সামনে মর্ডান হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। হাসপাতালের সামনে অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সাইনবোর্ড থাকলেও তাদের অধিকাংশ দেখা মেলে না। একই ডাক্তাদের নাম অনেক ক্লিনিক ও হাসপাতালের সাইনবোর্ডেও দেখা যায়। রোগী ধরতে এমন ফাঁদ পাতা হয়েছে। পাশাপাশি হাসপাতালে অন্তত একজন এমবিবিএস ডাক্তার ও তিনজন ডিপ্লেমা নার্স থাকা বাধ্যতামূলক থাকলেও তা শুধু খাতা কলমে সীমাবদ্ধ। প্রতিষ্ঠানটি চলে দালালের উপর। এখানে অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, যশোর জেনারেল হাসপালের সামনে ২০০ গজের মধ্যে অবস্থিত মর্ডান হসপিটাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার চিকিৎসাসেবা ও রোগ নির্ণয়ের নামে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। দালালের উপর নির্ভরশীল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি গাও-গ্রাম থেকে আসা সাধারণ মানুষের সরলতা নিয়ে চিকিৎসাসেবার নামে অবাধে চালিয়ে যাচ্ছেন বাণিজ্য। গত সোম থেকে বুধবার পর্যন্ত হাসপাতালটিতে দায়িত্বরত প্যাথলজি বিভাগের কোন চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। প্রতিদিন গড়ে ১৫/২০টি বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার রিপোর্টে দায়িত্বরত চিকিৎসকের স্বাক্ষর দেখা গেছে।
সদরের দেয়াড়া গ্রামের আব্দুল হান্নান নামে অভিযোগ করে বলেন, মর্ডান হাসপাতালে বিভিন্ন ডাক্তার অপারেশন করছে। পরবর্তীতে রোগীর খোজ নেন না তারা। তাদের নিজস্ব কিছু লোক রয়েছে যারা সদর হাসপাতালসহ গ্রামে নিযুক্ত কোনো রোগীর পেট ব্যথা হলে তারা হাজির হয়ে বিভিন্নভাবে ভয় দেখিয়ে নিয়ে আসছে এবং অপারেশন করাতে বাধ্য করছে। আর হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা।
২০২২ সালের ৪ মার্চ হাসপাতালটিতে ভুল চিকিৎসায় ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুরের আলতাব হোসেনের ছেলে আরিফ হোসেন (২৫) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়। নিহতের বোন শিল্পী জানান, সে গলার স্বর নালিতে সমস্যা নিয়ে যশোর মর্ডান হসপিটাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ভর্তি হয় দুপুর ৩টার দিকে। সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে অপারেশনের রুমে ডাক্তার আক্তারুজ্জামান অজ্ঞান করার ইনজেকশন পুশ করলে ঘন্টা খানেক পরেও রোগীর জ্ঞান ফেরেনা। পরে তাদের পরিবারকে জানানো হয় তাদেও রোগী মারা গেছে। তবে কি কারণে মৃত্যু হয়েছে সে সব কোনো কারন তার পরিবারকে জানানো হয়না। পরে খুব দ্রুত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি গাড়ি ঠিক করে দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়। তবে নিহতের পরিবারের দাবি ভুল চিকিৎসায় আরিফের মৃত্যু হয়েছে।
মর্ডান হসপিটাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের (ইনডোর) ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম জানান, তাদের এখানে তিনজন চিকিৎসক সর্বক্ষনিক ইনডোরে উপস্থিত থাকেন। তিনজন প্যাথলজিষ্ট পর্যায়ক্রমে কার্যক্রম পরিচালনা করেন বলে জানান।
তবে সরেজমিনে তাদের একজনকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। হাসপাতালটিতে রয়েছে ১০টি ক্যাবিন। এছাড়াও রয়েছে দুটি মহিলা ওয়ার্ডে ২০টি বেড ও পুরুষ ওয়ার্ডে ১০টি বেড। যার অধিকাংশতেই রয়েছেন রোগী। কিন্তু পুরো হাসপাতালে চিকিৎসক নেই একজনও।