নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেছেন, স্বৈরাচারকে হটানোর জন্য আমরা সবাই এক হয়েছিলাম। আজকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সময় এসেছে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সকল বিভেদ-বিভাজনকে রুখে দিতে হবে। আমরা সকলে মিলে এমনটি দেশ গড়তে চাই, যে দেশের জন্য আবার ভবিষ্যতে আমাদের প্রজন্মকে রক্ত দিতে না হয়।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট যশোর জেলা শাখা আয়োজিত শারদীয় দুর্গাপূজা ও দীপাবলি পূর্ব সম্প্রীতির মিলনামেলায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার শহরের পৌর উদ্যানে অনুষ্ঠিত সম্প্রীতির মিলনমেলায় অধ্যাপক নার্গিস বেগম আরও বলেন, রক্তের নদী পার করে পিচ্ছিল পথ বেয়ে যশোর পৌর উদ্যানে দাঁড়িয়ে মুক্তভাবে কথা বলছি। এই টুকু অর্জন করতে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। আবার আমরা পূর্বের অন্ধকার জায়গায় ফিরতে চাই না। সে কারণে বিভাজনকে রুখে দিতে হবে। আমরা সকলেই মিলে বাংলাদেশকে সকলের গ্রহণযোগ্য বসবাসযোগ্য করে গড়তে চাই। যেখানে আনন্দময় পরিবেশে আমাদের সন্তানরা বেড়ে উঠতে পারে। এই প্রচেষ্টা হোক আমাদের সকলের। অমাবশ্যা কেটে পূর্ণিমা চাঁদের আলোয় আলোাকিত হবে আমাদের বাংলাদেশ ।
তিনি বলেন, আমরা এমন একটি পরিবেশ কিংবা সামাজিক সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে বড় হয়েছি। যেখানে আজকের মতো কোন সংগঠনের কিংবা আলাদা পরিচয়ে মিলনমেলা করার দরকার পড়তো না। কিন্তু আজকে দরকার পড়ে, সেটি কি কারণে পড়ে সেটা আমরা সবাই জানি। সকল ধর্মই সম্প্রীতি, ন্যায়ের কথা বলে অন্যায়কে ঘৃণা করতে শেখায় এবং মানবসেবায় কাজ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে। ধর্ম বর্ণ সকলের মিলিত ত্যাগের বিনিময়ে দেশ ও ভূখন্ড পতাকা অর্জন করেছি। বারংবার আমাদের স্বাধীনতার ওপর আঘাত এসেছে। মানবাধিকার কথা বলার অধিকার হরণ করা হয়েছে। কিন্তু এই নরম ভূখন্ডের মানুষ রুখে দাঁড়িয়ে চরম সর্বনাশার হাত থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করেছে। আমরা নরম মাটির মানুষ, আমরা ক্ষমা করি ভুলে যাই। কিন্তু প্রয়োজনে রুখে দাঁড়াই। সবার আগে বাংলাদেশ, এই কথাটি মনে রাখি তাহলে আলাদা করে সম্প্রীতির কথা মনে করিয়ে দেয়ার দরকার হবে না।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট যশোর জেলা শাখার আহ্বায়ক অ্যাড. দেবাশীষ দাস সম্প্রীতির মিলনমেলায় সভাপতিত্ব করেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ যশোর জেলা শাখার সভাপতি দীপংকার দাস রতন, যশোর রামকৃষ্ণ আশ্রম ও রামকৃষ্ণ মিশনের সহ-সম্পাদক স্বামী আত্মবিভানন্দ মহারাজ, মানবাধিকার সংগঠক রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শ্যামল দাস প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, বিএনপি নেতা অ্যাড. মো. ইসহক, গোলাম রেজা দুলু, যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মারুফুল ইসলাম, দৈনিক লোকসমাজ পত্রিকার প্রকাশক শান্তনু ইসলাম সুমিত, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক খান মো. শফিক রতন, এবিএম আখতারুজ্জামান, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ, জেলা লৌহ ও সিমেন্ট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সাইফুদ্দৌলা প্রমুখ।
এর আগে মহিলাদের বালিশ বদল ও ভারসাম্য দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পরিচালনা করেন জেলা ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাহতাব নাসির পলাশ। সর্বশেষ দেশবরেণ্য কৌতুক শিল্পী কাজল মল্লিক কৌতুক অভিনয় পরিবেশন করেন। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট যশোর জেলা শাখার সদস্য সচিব নির্মল কুমার বিট।

 
									 
					