নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের অভয়নগরের নওয়াপাড়া বিএনপি নেতা (পদ স্থগিত) আসাদুজ্জামান জনির নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে অস্ত্র ও মাদকের সিন্ডিকেট। প্রশাসনের অভিযানে বিভিন্ন সময় অস্ত্র ও মাদকসহ সাঙ্গাপাঙ্গারা আটক হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছেন মূল হোতা জনি। অবশ্য তাকে ধরতে একবার যৌথবাহিনী অভিযান পরিচালনা করেছিল।
সূত্র মতে, নৌপথে ও রেলপথে নওয়াপাড়ায় মাদকের বড় বড় চালান আসে। খুলনা-মংলা-বেনাপোল রুটে চলা ট্রেনে আসে মাদকের চালান। জনি সিন্ডিকেটের সদস্যদের মাধ্যমে মাদক ও অস্ত্র এনে পৌছে দেয় গন্তব্যে। সিন্ডিকেটের আরেক হোতা আব্দুর রশিদ বিশ্বাসের মাধ্যমে পর্দার আড়ালে থেকে দীর্ঘদিন ধরে এমন অবৈধ কারবার করে চলেছেন জনি। আব্দুর রশিদসহ তিনজন সম্প্রতি অভয়নগরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক হয়েছিলেন। যৌথবাহিনী উপজেলার বৌবাজার এলাকা থেকে রুহুল আমিন বিশ্বাস ও সেন্টু আহমেদকে এবং গুয়াখোলা গ্রাম থেকে আবদুর রশিদ বিশ্বাসকে আটক করে। এসময় দেশি ১৯টি অস্ত্র (রামদা), চাইনিজ কুড়াল ৩টি, ৪১৮ পিস ইয়াবা, ১৫০ গ্রাম গাঁজা, ১০ লিটার মদ জব্দ করা হয়। সম্প্রতি আবদুর রশিদ জামিনে বেরিয়ে আবারও বেপরোয়া হয়ে পড়ে।

সূত্রের দাবি, আওয়ামী সরকার পতনের পর মাদক ব্যবসা বন্ধ হয়নি। হয়েছে হাত বদল। জনির দেয়া অর্থের মাধ্যমে মাদকের চালান আসছে ড্রাইভারপাড়াসহ গরুহাটা এলাকায়। এরপর তা ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে পৌর এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে।
স্থানীয়রা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, মাদক কারবারের অর্থলগ্নিদাতা আসাদুজ্জামান জনি। তাদের দাবি, আবদুর রশিদকে দিয়ে জনি চট্টগ্রাম থেকে ইয়াবার চালান আনেন। গাঁজা আনেন বেনাপোল থেকে ট্রেনে করে। সেগুলো বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে পৌছে দেন অভয়নগরের বাগদা গ্রামের ইউসুফ বিশ্বাস, মামুন, রিপন, নাইমুর রহমান টিকলি। এরা সবাই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। এদের নামে একাধিক মামলাও আছে। তাদের মধ্যে ইউসুফ বিশ্বাস জনির দুসম্পর্কেও আত্মীয় বলে স্থানীয় সূত্র দাবি করেছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্রের দাবি, আসাদুজ্জামান জনির বাবার মালিকানাধীন জাহাজ আছে। ওই জাহাজ কয়লা সার নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে নওয়াপাড়া বন্দরে আসা যাওয়া করে। অভিযোগ রয়েছে ওই জাহাজে করে চট্টগ্রাম থেকে ইয়াবার বড় চালান আসে অভয়নগরে। এসব মাদক অভয়নগর থেকে জেলার সব জায়গা ছড়িয়ে দেয় জনির লোকজন। এছাড়াও ভারতীয় অস্ত্র চালান আনা হয় বেনাপোল ও চৌগাছা সীমান্ত থেকে। এগুলো সব কিছু জনির হয়ে নিয়ন্ত্রণ করে আবদুর রশিদ।
অভয়নগর পুলিশের এক কর্মকর্তার দাবি, বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে আইনশৃংখলা রক্ষায় পূর্ণদমে অভিযান চালাতে পারছে না। তবে যৌথবাহিনীর অভিযানে জনির সাঙ্গাপাঙ্গা কয়েকজন আটক হয়েছিলেন। সেদিন জনিকে ধরা যায়নি। তবে অপরাধ করে বেশিদিন পার পাওয়ার সুযোগ নেই।