কল্যাণ রিপোর্ট: আজ শুভ বড়দিন। সাড়ম্বরে ও উৎসবমুখর পরিবেশে দিবসটি উদ্যাপন করবে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা। বড়দিন খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে এই দিনে খ্রিস্ট ধর্মের প্রবর্তক মহামানব যিশু জেরুজালেমের কাছে বেথেলহেমের এক গোয়ালঘরে জন্ম নিয়েছিলেন। হিংসা-বিদ্বেষ, অন্যায়-অত্যাচার ও পাপাচারে নিমজ্জিত মানুষকে সুপথে আনার জন্যই যিশু আবির্ভূত হয়েছিলেন। যিশুর জন্মদিন তাই শুধু খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য নয়, সারা মানবজাতির জন্যই একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। বড়দিনের কর্মসূচি শুধু আনন্দ-উৎসবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, যিশুর শান্তির বাণীও ছড়িয়ে দেয়া হবে মানুষের মধ্যে। তাই বড়দিন শুধু একটি উৎসবই নয়, সৌহার্দ্যের উদাহরণ সৃষ্টি করার দিন।
এদিকে বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। তারা এতে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষকে শুভেচ্ছা জানান।
বড়দিন উপলক্ষে আজ যিশুভক্তরা নানা আয়োজন করেছে। ঘরে ঘরে জ্বালানো হয়েছে রঙিন আলো, ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়েছে। নানা ধর্মীয় আচারে পালিত হবে দিনটি। গির্জাগুলো সাজানো হয়েছে রঙিন বাতিতে। যিশু গোয়ালঘরে জন্মেছিলেন বলে তার অনুসারীরা ঘরে ঘরে প্রতীকী গোশালা তৈরি করেছে।
সকালে গির্জায় বিশেষ প্রার্থনা দিয়ে দিনের শুরু হবে আজ। তবে যশোরের ক্যাথলিক গির্জা, শিমুলিয়া ক্যাথলিক গির্জাসহ বেশকিছু গির্জা এদিনই রাত ১২টা ১ মিনিটে বিশেষ প্রার্থনার মাধ্যমে দিনের অনুষ্ঠান শুরু করবে। দিবসটি উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটির দিন। সংবাদপত্রগুলো দিনটিতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, সরকারি-বেসরকারি টিভি ও রেডিওতে যিশুখ্রিষ্টের জীবন ও কর্ম নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র সম্প্রচারসহ দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হবে।
এ পবিত্র উৎসবের দিনে সকল খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন, যশোর ক্যাথলিক চার্চের ফাদার মৃত্যৃঞ্জয় দফাদার, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ ক্যাব এর কেন্দ্রীয় প্রধান উপদেষ্টা যোষেফ সুধীন মন্ডল, মহাসচিব উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার বাপী ও নির্বাহী সদস্য জেমস আব্দুর রহিম রানাসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার
বড়দিনের উৎসব নির্বিঘ্ন করতে সর্বোচ্চ পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন যশোরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, বড়দিন উপলক্ষে সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই। এর পরও কোনো কিছুকে ছোট করে দেখা হচ্ছে না। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন ঘিরে প্রতিটি চার্চের আশপাশে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত এলাকায় তিন দিন ধরে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এবং বড়দিনের সকাল থেকেই আইন শৃংখলা বাহিনী গির্জার অভ্যন্তরে সকলের নরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্বপালন করবে।