নিজস্ব প্রতিবেদক
আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যশোর সদরের রাজারহাট শ্মশানের দখলদারিত্ব বজায় রেখেছেন রমেন পাল ও তার লোকজন। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের কয়েক নেতা অবৈধ দখলদারপক্ষকে আশ্রয় দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শ্মশান কমিটির নেতৃবৃন্দ।
বুধবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন শ্মশান কমিটির সহসভাপতি পলাশ বিশ্বাস। তিনি বলেন, রাজারহাট শ্মশানটি পরিচালিত হয় প্রতি তিন বছর পরপর কমিটি গঠনের মাধ্যমে। ২০২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর সাধারণ সভার মাধ্যমে রতন কুমার পালকে সভাপতি ও গৌরচন্দ্র সাহাকে সাধারণ সম্পাদক করে ২১ সদস্যের কমিটি গঠন কর হয়। কিন্তু সাবেক নেতা রমেন পাল পদবঞ্চিত হয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি পূজা উদযাপন পরিষদের সহযোগিতায় বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়ে নিজে সভাপতি হয়ে পাল্টা কমিটি গঠন করেন। এরপর থেকে রমেন পাল ও তার লোকজন শ্মশানের কাজে বাধা প্রদান করতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকায় সভাপতি রমেন’র নেতৃত্বাধীন কমিটির সদস্যদের বিবাদী করে সদর সহকারী জজ আদালতে মামলা করা হয়। এ মামলার শুনানি শেষে গত ১১ এপ্রিল রমেন পালের কমিটির কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদেশ দেন বিচারক।
তিনি বলেন, কিন্তু পেশি শক্তির জোরে রমেন পাল ও তার লোকজন শ্মশানের দখলদারিত্ব বজায় রেখেছেন। গত ২৩ এপ্রিল ঈদের দিন জেলা পূজা পরিষদরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে আদালতের আদেশ অমান্য করে নির্মাণ কাজ করেন। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি ঘটনাস্থলে যেয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়ে চলে আসেন। এ অবস্থায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। তিনি বিষয়টি সমাধানের জন্য রাজনৈতিক, সামাজিক ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করেছেন। এদিকে বিবাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নব কুমার কুন্ডু বলেন, রাজারহাট শ্মশান কমিটি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সদর সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা হয়েছিল। এ মামলায় রমেন পালসহ কমিটির কয়েকজনকে বিবাদী করা হয়েছে। গত ১১ এপ্রিল উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি শেষে সদর সহকারী জজ আদালতে বিচারক অভিযোগের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত একটি নিষেধাজ্ঞা আদেশ দেন। তিনি বলেন, বুধবার এ আদেশের বিরুদ্ধে ও মামলার যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে আপিল করা হয়েছে। বিচারক আপিল ও স্থগিত আবেদনের উপর আগামী ১৪ জুন শুনানি জন্য দিন ধার্য করেছেন। এই বিষয়ে যশোর পূজা পরিষদের সভাপতি দিপাঙ্কর দাস রতন দৈনিক কল্যাণকে বলেন, ‘জায়গাটি ওরা কুক্ষিগত করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে মাদকের আখড়া করতে চাইছে। পূজা পরিষদ তাদের সেই কাজে বাধা দেওয়াতে একটি পক্ষের ইন্ধনে আমাদের নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে। পূজা পরিষদের নামে যেসকল অভিযোগ আনা হচ্ছে; সেগুলো মিথ্যা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, শ্মশান কমিটির সভাপতি রতন কুমার পাল, প্রভাষ কুমার পাল, কৃষ্ণ সাহা, রাজ কুমার অধিকারী, রবিন অধিকারী, কৃষ্ণ দাস, গনেশ বিশ্বাস, বিপুল সরকার, বিশ্বজিৎ সরকার প্রমুখ।
