নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে সালমা আক্তার নামে এক গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় মামলা নেয়নি থানা পুলিশ। বাধ্য হয়ে নিহতের মা ফিরোজা বেগম সাতজনের নামে আদালতে অভিযোগ করেন। বিচারকের নির্দেশে শনিবার নিয়মিত মামলাটি রেকর্ড করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
মামলার বাদী নিহতের মা ফিরোজা বেগম সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি অভয়নগর উপজেলার মশরহাটি গ্রামে বসবাস করেন।
আসামিরা হলো, সদর উপজেলার বানিয়ারগাতি গ্রামের ইসমাইল হোসেন মোল্যা, তার স্ত্রী পাতাসি বেগম, চার ছেলে আমির হামজা, জহির, পান্না, রুবেল এবং মিলনের স্ত্রী মনিহার বেগম।
ফিরোজা বেগম মামলায় উল্লেখ করেছেন, মেয়ের সালমার বয়স দেড় বছর হলে তার পিতা মারা যান। এরপর বাদী অতিকষ্টে জুট মিলে কাজ করে মেয়েকে লালন-পালন এবং নিজের জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। ২০১৫ সালের ১৯ জুলাই আসামি আমির হামজার সাথে সালমার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে সাত তাদের একটি মেয়ের জন্ম হয়। বর্তমানে মেয়েটির বয়স সাত বছর। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় যৌতুক বাবদ আমির হামজা টাকা ও বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়েছেন ফিরোজা বেগম। এরপরও এক লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে বিভিন্ন সময় সালমার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন আমির হামজা। ২০২৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর সকালে আবারও যৌতুকের টাকার জন্য সালমাকে মারপিট করে গ্যাস ট্যাবলেট খাওয়াইয়া দেয় আসামিরা। আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে পড়লে জুট মিলে দায়িত্ব পালনকালে এক আত্মীয়ের মামধ্যমে সংবাদ পান ফিরোজা। এরপরে জামাই আমির হামজাকে মোবাইল করা হলে সে জানায় সামলা অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছে। সেখানে গিয়ে না পেয়ে আবারও ফোন করলে বলে খুলনা আড়াইশ’ শয্যা হাসপাতালে আছে। কিন্তু সেখানে গিয়েও না পেয়ে আমির হামজার বাড়িতে গিয়ে সালমাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। পরে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করা হলে সালমার লাশ যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে নিয়ে ময়নাতদন্ত শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এই ঘটনায় থানায় গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। বাধ্য হয়ে গত ১১ জানুয়ারি এই ব্যাপারে আদালতে অভিযোগ দেয়া হয়। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ আগামি সাত কার্য দিবসের মধ্যে মামলাটি গ্রহণ করে এবং পরবর্তী ব্যবস্থা সম্পর্কে আদালতকে অবহিত করার জন্য কোতোয়ালি থানার ওসিকে আদেশ দিয়েছেন।