নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রির ভোটার তালিকা সংশোধন করে দ্রুত নির্বাচনের নির্দেশ দিয়ে মামলা খারিজ করেছেন আদালত। রোববার সিনিয়র সহকারী জজ বিচারক সুজাতা আমিন এ রায় ঘোষণা করেন। ফলে চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচনে আর কোন বাধা থাকলো না।
দীর্ঘ আট বছর পর গত ৭ জানুয়ারি যশোর চেম্বারের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু গত ৪ জানুয়ারি জাল আয়কর সনদ দিয়ে ভোটার করানো হয়েছে অভিযোগ এনে মেসার্স পারভেজ ট্রেডার্সের মালিক মেহেদী হাসান বাদী হয়ে যশোরের আদালতে একটি মামলা করেন। এরপর আদালত এ নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দেন। মামলায় গত ৮ জানুয়ারি ব্যবসায়ী ঐক্য প্যানেলের ১৮ জন বিবাদী হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হন। সর্বশেষ ১০ জানুয়ারি ব্যবসায়ী অধিকার পরিষদের ১৮ প্রার্থীও এ মামলার বিবাদী শ্রেণিভুক্ত হন।
ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের প্রার্থী ও প্যানেল নেতা শেখ আতিকুর বাবু বলেন, যেহেতু সময় শেষ হয়েছে। এ কারণে ঘোষিত তফশিলে আর নির্বাচনের সুযোগ নেই। আমরা আজ সোমবার প্রশাসকের সাথে স্বাক্ষাতের পর পরবর্তী করণীয় চূড়ান্ত করবো। বিবাদী পক্ষে মামলাটির আইনি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রশাসক এখন চাইলে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করার উদ্যোগ নিতে পারেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী শফিকুল ইসলাম মিঠু জানান, গতকাল চেম্বার অব কমার্সের করা মামলাটি খারিজ করে দিয়ে আদালত ভোটার তালিকায় যদি অসংগতি থাকে তাহলে সেটি সংশোধন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এব্যাপারে যশোর চেম্বার অব কমার্সের প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান জানান, মামলাটি খারিজ হওয়ার খবর জেনেছি। রায় হাতে পাওয়ার পর দেখবো সেখানে কি নির্দেশনা এসেছে। তবে নতুন করে নির্বাচন করতে হলে আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে। ইতিমধ্যে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সব ভোটারদের আয়কর সনদ আসল কিনা তা যাচাই বাছাই করার।
এবারের নির্বাচনে দুই প্যানেলে ১২ করে ২৪ জন সাধারণ সদস্য পদে ও ৬ জন করে ১২ জন সহযোগী সদস্য এবং সহযোগী সদস্য হিসেবে ১ জন প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সর্বশেষ ২০১১ সালের ১৬ এপ্রিল এ চেম্বারটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে জেলা বিএনপির তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খানের নেতৃত্বাধীন প্যানেল বিজয়ী হয়। ২০১২ সালের ৩ মার্চ মিজানুর রহমান খানের নেতৃত্বাধীন কমিটি দায়িত্ব বুঝে পান। ২০১৪ সালের ২৩ এপ্রিল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী ওই বছরের ১২ জুলাই ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই নির্বাচন আইনি জটিলতায় ভেস্তে যায়। ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। সেই থেকে দীর্ঘ ৮ বছর প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব পালন করছে প্রশাসক। এবারের নির্বাচনে দুটি প্যানেলে ঘোষণা করা হয়েছিল।
প্যানেল দুটির একটির নেতৃত্ব ছিলেন যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক নির্বাহী সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এএসএম হুমায়ুন কবীর কবু। তার নেতৃত্বে গঠিত কবু-মিজান-মিঠু প্যানেলের ‘ব্যবসায়ী অধিকার পরিষদ’ এবং অন্যটির নেতৃত্বে রয়েছে যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান খান। তার নেতৃত্বে মিজান-বাবু-সুজা-ঈদুল প্যানেলের ‘ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ’। এই দুই প্যানেলে সাধারণ সদস্য হিসেবে লড়ছেন ১২ জন করে ২৪ জন এবং সহযোগী সদস্য হিসেবে রয়েছেন ৬ জন করে ১২ জন প্রার্থী। স্বতন্ত্র রয়েছেন একজন প্রার্থী।