নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ১৪ সদস্যকে আটক করেছে যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। তারা যশোর উপশহর এলাকার গোল্ডেন ইজিবাইকে ডাকাতিসহ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনায় জড়িত বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। এসময় ডাকাত সদস্যদের কাছ থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের মালামাল উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে ইজিবাইকের ৬৭ পিস ব্যাটারি, ২টি চোরাই পিকআপ, ৪৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, ১১০টি গ্যাস সিলিন্ডার ও ট্রাকও মিনি ট্রাকের টায়ার।
এ ব্যাপারে গতকাল বুধবার বিকেল ৫টার দিকে যশোর পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার নুর ই আলম সিদ্দিকী। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খায়রুল বাশারসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আটককৃতরা হলো, ঢাকার নারায়নগঞ্জের শহিদনগরের রহিম হোসেনের ছেলে হিরা রহমান ওরফে বিজয় হোসেন, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার মুন্সিকান্দি গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে আলমগীর হোসেন, ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ইকুরিয়া গ্রামের দুদু মোল্যার ছেলে রবিন মোল্যা, মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার চকেরপাড়া গ্রামের সামছু মিয়ার ছেলে নজরুল ইসলাম, সদর থানার ইসলামপুর গ্রামের আব্দুল হাসেমের ছেলে আমির হোসেন, নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার আউয়ালীকান্দি গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে রাকিব হোসেন, নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার পাগলা গ্রামের মৃত জাকির হোসেনের ছেলে সোহেল, মুন্সিগঞ্জ সদর থানার কাশিমপুর গ্রামের মৃত মুকুল হোসেনের ছেলে জাহিদ হোসেন, টঙ্গীবাড়ি থানার টঙ্গীবাড়ি গ্রামের মোফাজ্জেল মেহের আলীর ছেলে আলমগীর হোসেন শেখ, শরিয়তপুর জেলা সদরের কোটাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে ইউনুছ আরী, মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে বাবলু রহমান, নোয়াখালী সদর উপজেলার মতিপুর গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে নিজাম উদ্দিন, মাদারিপুর সদর উপজেলার কাপালীকান্দি গ্রামের মৃত তোরাব আলী মাতুব্বরের ছেলে জুয়েল মাতুব্বর ও ফরিদপুর সদর উপজেলার পশ্চিম ভাষানচর গ্রামের মৃত শুকুর আলী খানের ছেলে আব্দুল কাদের।
আটককৃত ডাকাতদলের প্রধান বিজয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৪ টি মামলা রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, যশোর নতুন উপশহরে গোল্ডেন বাইক নামক একটি ইজিবাইকের শোরুমের তালাকেটে ও গ্রিল ভেঙ্গে ডাকাতি হয়। ডাকাত দলের সদস্যরা ট্রাক ভরে দোকানের সব ব্যাটারি, যন্ত্রাংশ ও টায়ার লুট করে নিয়ে যায়। এর আগে যশোরের একটি টায়ারের দোকানে ও একটি গ্যাসের দোকানে ওই একই গ্রুপ ডাকাতি করে বিপুল অর্থের মালামাল লুট করে।
এসব ঘটনায় জেলা পুলিশের ভাবমুর্তি দারুন ভাবে ক্ষুণœ হয়েছে। পরবর্তীতে জেলার সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে পুলিশি টহল জোরদারসহ কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়। ডাকাতির ঘটনা উদঘাটনে জেলার ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। গত প্রায় এক সপ্তাহ ঝটিকা অভিযান চালিয়ে ক্লুলেস ডাকাতির রহস্য উন্মোচন ও ডাকাত দলের ১৪ সদস্যকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আটক ও তাদের হেফাজত থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মালামাল উদ্ধার করে যশোর ডিবি পুলিশ। গত সোমবার দিনগত রাতে একাধিক টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৃথক অভিযান চালিয়ে আন্ত:জেলা ডাকাত দলের এসব সদস্যকে আটক করে। পুলিশ আরো জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে তারা এসব ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। একই সাথে জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
গতকাল বুধবার তাদেরকে যশোর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। এসময় কয়েকজনে যশোরের কয়েকটি স্থানে ডাকাতি ও চুরি করার কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।