নিজস্ব প্রতিবেদক: মামলার বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় প্রায় ২০ বিঘা জমির সেচ বন্ধ করে দেয়ায় বোরো ধানের ক্ষেত শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। যশোরের ঝিকরগাছার মল্লিকপুর ও যশোর সদরের ছোট মেঘলার প্রায় ২০ বিঘা জমির কৃষকদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই ২০ বিঘা ক্ষেতের মাটি শুকিয়ে গাছ হলুদ হয়ে গেছে। দু’এক দিনের মধ্যে এসব খেতে সেচ না দিলে ধান গাছ সব মারা যাবে।
কৃষক খাদিজা খাতুন দৈনিক কল্যাণকে বলেন, নলকূপের মালিক সাইফুজ্জামানের করা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করায় পানি দিবেন না বলে জানিয়েছেন। এক মাস আগে লাগানো ধান গাছে আর ক’দিন বাদে শিষ বেরুবে। এখন যদি পানির অভাব হয় তাহলে ধান হবে না।
পানির অভাবে আব্দুল কুদ্দুসের এক বিঘা জমির বোরো ক্ষেত হলুদ হয়ে গেছে। এতে ধান হওয়ার আর সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, এক বিঘা ধান চাষে মোট খরচের অর্ধেক করা শেষ হয়ে গেছে।
মাঠে আরো কথা হয়, কৃষক সাইদুল ইসলাম, হযরত আলী (সাবেক শিক্ষক), হাফিজুর রহমানসহ বেশ কয়েজনের সাথে। নলকূপের মালিক সাইফুজ্জামান তাঁদেরকে জানিয়েছেন পানি দেব আমার ইচ্ছামতো, আরো টাকা বেশি লাগবে পানি নিতে হলে।
ছোট মেঘলা গ্রামের আব্দুর রহিম ভুট্টো বলেন, এ মাঠের শতাধিক বিঘা জমিতে বোরোধান চাষের জন্য আমরা ২০১৭ সালে একটি গভীর নলকূপ বসানোর আবেদন করি। উপজেলা সেচ কমিটি যাচাই—বাছাই করে ২০১৯ সালে লাইসেন্স প্রদান করে।
এ নিয়ে আরেক গভীর নলকূপের মালিক ঝিকরগাছার মল্লিকপুর গ্রামের সাইফুজ্জামান মামলা করেন। ফলে আমাদের নলকূপের লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায় এবং সেচ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। অথচ তার নলকূপটি রয়েছে দুই হাজার ফুট দূরে ও নিচু জায়গায়।
কৃষক ভুট্টো আরও বলেন, প্রচলিত সেচ আইনে বলা হয়েছে, একটি গভীর নলকূপ থেকে অপর নলকূপের দূরত্ব হবে এক হাজার ৯৪১ ফুট।
তারপরও সাইফুজ্জামান ওই বছরেই ১৯৮৬—৮৭ সালের সেচ আইন উল্লেখ করে একটি ষড়যন্ত্র মামলা করে আমাদের লাইসেন্সটি স্থগিত করে দেন। সেই থেকে মাঠটিতে বোরোধান চাষ করতে পারছেন না কৃষকেরা।
এ বিষয়ে সাইফুজ্জামান বলেন – কৃষকেরা অন্যের ডিজেল মেশিনের সাহায্যে ধানের জমিতে সেচ দিচ্ছে, পাশাপাশি আমিও তাদের সেচের ব্যবস্থা করছি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়।
রোববার উপজেলা সেচ কমিটির সদস্য সচিব সোহেল রানা বলেন – আমি বিষয়টি জানতাম না, এখনই ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।