আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ, কেশবপুর
আবু বকরের হত্যাকারীকে খুঁজে বের করা কঠিন কোন কাজ নয়। যারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে লড়াই করেছে। ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে লড়াই করেছে। আইনের শাসনের জন্য লড়াই করেছে। তাদের ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে খুন-গুমের স্বীকার হতে হয়েছে। গত জুলাই-আগস্টের বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতার পালা বদল ঘটেছে। কিন্তু এ অবস্থা সৃষ্টি করতে যুগ যুগ ধরে আবু’র মত জাতীয়তাবাদী দলের নিবেদিতদের জীবন দিতে হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে যশোরের কেশবপুর থানা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মরহুম আবু বকর আবুর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
তিনি আবু বকর আবুর হত্যার বিচার দাবি করে আরো বলেন, আবু বকর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বৈবাহিক সম্পর্ক করেননি, সহায় সম্পদ তার কাছে তুচ্ছ বিষয় ছিল। তার কোন শত্রু থাকার কথা নয়। এটা দিনের আলোর মত সত্য তার শত্রু রাজনৈতিক শত্রু ছিল। গত ১৬টি বছর ৬ শত নেতাকর্মী গুমের স্বীকার হয়েছে। আবু বকর আবুর মত ৫ হাজার বিএনপির নেতা খুনের শিকার হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে পঙ্গু করা হয়েছে। ৬০ লক্ষ মামলা দিয়ে কোটি কোটি নেতাকর্মীকে হয়রানি করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও থানা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদের সভাপতিত্বে দলীয় কার্যালয় চত্বরে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, জেলা বিএনপির সদস্য মিজানুর রহমান খান, পৌর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ্বাস, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক।
পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরো বক্তব্য রাখেন থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর কবির বিশ্বাস ও হুমায়ুন কবির সুমন, পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি কুতুব উদ্দীন বিশ্বাস, বিএনপি নেতা ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক আলাউদ্দীন আলা, রেজাউল ইসলাম, মাসুদুজ্জামান মাসুদ, চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির পলাশ, আবু বকরের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তার ভাইপো হুমায়ুন কবীরসহ আরো অনেকে।
এ সময় ত্রিমোহীনি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকরাম সানা, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির ডালু, সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকরাম খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, মজিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাজী, বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাস্টার কেএম খলিলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম গাজি, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাস্টার শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মাস্টার রেজাউদ্দৌলা নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, পাঁজিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মুকুল, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাসেম, সুফলাকাটি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মহিউদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার জাহাঙ্গীর আলম, গৌরিঘোনা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাহমুদুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফ্ফার, সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল হাসনাত পাশা, সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গোলাম মোস্তফা বাবু, সাধারণ সম্পাদ রফিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হোসেন, হাসানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলমগীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাস্টার মিজানুর রহমান কাকর, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল মেহেদী প্রমুখসহ জেলা ও থানা বিএনপি, যুবদল, সেচ্ছাসেবকদল, কৃষকদল, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বেলা ১১ টায় তার কবর জিয়ারত করা হয়। আলোচনা শেষে আবু বকর আবুর রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন মাওলানা খলিলুর রহমান।
উল্লেখ্য, ১৯৮২ সালে থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, ১৯৮৭ সালে থানা বিএনপির আহ্বায়ক, ১৯৮৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত থানা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৯ সালে যশোর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মজিদপুর ইউনিয়ন থেকে ৪ বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
আবু বকর আবু একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপত্র ক্রয় ও জমা দেয়ার জন্য ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর ঢাকা যান। সেখানে পল্টন এলাকার মেট্রপলিটন হোটেলের ৪১৩ নম্বর কক্ষে অবস্থান নেন তিনি। ১৯ নভেম্বর বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্য সেখানে অবস্থান করতে থাকেন। ১৮ নভেম্বর রাত ৮ টার পর রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে তিনি নিখোঁজ হন। নিখোঁজের ৪ দিন পর ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে তার লাশ পাওয়া যায়।