যশোরে সংগৃহীত খাদ্যশস্য নিয়ে বিপাকে কর্তৃপক্ষ
আবদুল কাদের: আমদানিকৃত চালে ভরে গেছে যশোরের ১০টি খাদ্য গুদাম। এ কারণে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত ধান চাল রাখার জায়গা পাচ্ছে না ধাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ। এই খাদ্য খেঝালা জায়গায় রাখতে হবে অথবা অন্যত্র পাঠাতে হবে। যশোরের ওই ১০ খাদ্য গুদামের ধারণ ক্ষমতা সাড়ে ২০ হাজার মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে আমদানিকৃত চালে সব ভরে গেছে। এখন চলছে ধান-চাল সংগ্রহের মৌসুম। ২০২১-২২ অর্থবছরে যশোরে চাল ১৬ হাজার ১৬৭ মেট্রিক টন ও ধান ৮ হাজার ১৫৫ মেট্রিক টন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে খাদ্যগুদামে সংগ্রহের ধান-চাল রাখার জায়গা নেই। এখন রাখতে হবে খোলা স্থানে।
ডিসি ফুড জানান, ইতোমধ্যে চাল সংগ্রহ হয়েছে ১৪ হাজার ৫৯৪ মেট্রিক টন এবং ধান এসেছে এক হাজার ১৯৫ মেট্রক টন। আগামী ২৮ ফেরুয়ারি পর্যন্ত চলবে সংগ্রহ কার্যক্রম। এবার সরকার ৪০ টাকা কেজি চাল ও ২৭ টাকা কেজি ধান কিনছে। চাল সংগ্রহ কাছাকাছি পৌঁছালেও ধান সংগ্রহ হচ্ছে না। কারণ বাজারে ধানের দাম ও সরকারি দর একই। পরিবহন খরচ, ধানের আদ্রতা নির্ধারণসহ নানা জটিলতার ঝামেলা এড়াতে কৃষকরা সরকারি গুদামে ধান সরবরাহ করছে না।
শার্শা উপজেলার শালকোনা গ্রামের ধানের ব্যবসায়ী সাহেব আলী জানান, বাজারে ধানের দাম ও সরকারি দর একই। বাজারে ধান বিক্রি করলে কোন ঝামেলা নেই। কিন্তু সরকারি গুদামে নানা ঝামেলা। ধালা, চিটা ধান নিতে চাই না। ফ্রেশভাবে ধান দিলে ওজন কমে যাবে। যে কারণে কৃষক সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে চাষিরা আগ্রহী নয়।
বাঘারপাড়া উপজেলার ধলগ্রামের কৃষক জসিম উদ্দিন বলেন, সরকারি গুদামে ধান দিতে হলে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দিতে হয়। তাহলে কোন ঝামেলা হয় না। কিন্তু আমরা সরাসরি দিতে গেলে ঝামেলা করা হয়। তখন খাদ্য কর্মকর্তরা বেছে ধান সংগ্রহ করতে চায়। ধান ভালোভাবে শোকানো হয়নি দাবি করে ফেরত পাঠান। আবার কখনো ধানে চিটা রয়েছে অযুহাত দাঁড় করানো হয়। এসব ঝামেলা এড়াতে গুদামে না দিয়ে ধান বাজারে বিক্রি করে দেন কৃষকরা।
যশোরের ইলা অটোরাইস মিলের মালিক শরিফুল আলম বলেন, আমারা চুক্তি অনুযায়ী সরকারকে চাল সরবরাহ করছি। কিন্তু এখন গুদামে জায়গা না থাকায় চাল দিতে পারছিনা। তবে সব চাল দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
যশোর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যনন্দ কুন্ডু জানান, ২৫৯ জন মিলারের সাথে তাদের চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী মিল মালিকরা তাদের চাল সরবরাহ করছেন। ইতিমধ্যে ৯০ ভাগ চাল সংগ্রহ হয়ে গেছে। চাল গুদামে এসেছে ১৪ হাজার ৫৯৪ মেট্রিক টন, এবং ধান এসেছে এক হাজার ১৯৫ মেট্রিক টন। বাজারে ধানের দাম কিছুটা বেশি হওয়ার কারণে গুদামে ধান দিতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে কৃষক।
তিনি জানান, জেলার ১০টি খাদ্য গুদামে ধারণ ক্ষমতা সাড়ে ২০ হাজার মেট্রিক টন। ইতিমধ্যে আমদানিকৃত চালে সব জায়গা ভরে গেছে। ২৮ ফেরুয়ারি পর্যন্ত চলবে সংগ্রহ অভিযান। এ সময় ধান-চাল এলে গুদামে রাখা যাবে না। অন্যত্র বা বিভাগীয় অফিসে পাঠাতে হবে।