কল্যাণ ডেস্ক
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আবারও গোপালগঞ্জে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমরা আবারো গোপালগঞ্জে যাব। জীবিত থাকলে প্রতিটি উপজেলায়, প্রতিটি গ্রামে কর্মসূচি করব। গোপালগঞ্জের ঘরে ঘরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না, বাংলাদেশপন্থীদের হবে।
নাহিদ ইসলামের দাবি, গোপালগঞ্জে তারা রাজনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান গতকালের বক্তব্যেই স্পষ্ট করেছি। গোপালগঞ্জসহ সারা দেশের মানুষকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করব। যুগের পর যুগ ধরে আওয়ামী লীগ গোপালগঞ্জবাসীর জীবন বিপন্ন করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে বেইনসাফি করেছে।
নাহিদ বলেন, আমরা কোনো যুদ্ধের আহ্বান নিয়ে যাইনি। আমাদের কর্মসূচি ছিল পূর্বঘোষিত ও শান্তিপূর্ণ। কিন্তু মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর পরিকল্পিতভাবে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পুনরাবৃত্তি। আওয়ামী লীগ সব সময় গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।
ফেসবুক পোস্টে তিনি দাবি করেন, ৫ আগস্টের পরেও অনেকে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ আনার চেষ্টা করেছে। তাদের মনে রাখা উচিত, আওয়ামী লীগ এখন আর রাজনৈতিক দল নয়—একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। আমরা বারবার বলেছি, আইনি প্রক্রিয়ায় গণহত্যার বিচার চাই। অথচ ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগের অপরাধীরা গ্রেপ্তার হলেও জামিনে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে।
নাহিদ ইসলাম প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ছাত্রলীগ একটি নিষিদ্ধ সংগঠন হওয়া সত্ত্বেও তাদের নেতাকর্মীরা গোপালগঞ্জে উপস্থিত ছিল। আমরা সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স পেয়েই পথসভা করেছি, পদযাত্রা করিনি। বিভিন্ন উপজেলা থেকে লোকদের আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এরপরেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পথসভা শেষ করেছি। ফেরার পথে সশস্ত্র হামলা হয়। নিরাপত্তাবাহিনীর নির্দেশ মেনে আমরা এলাকা ত্যাগ করেছি।
হামলায় চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা চারজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করি না। সন্ত্রাসীদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নিলে এই পরিস্থিতি হতো না। দায়ভার সরকার ও প্রশাসনকে নিতে হবে।
নাহিদ ইসলাম আবারো বলেন, আমরা শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে বলছি—গোপালগঞ্জের মাটিতে মুজিববাদ দাঁড়াতে পারবে না। গোপালগঞ্জ হবে শহীদ বাবু মোল্লা ও রথীন বিশ্বাসের গোপালগঞ্জ। মকসুদপুর ও কোটালীপাড়ায় আমাদের শহীদদের কবর রয়েছে—এই পবিত্র মাটি মুজিববাদীদের হতে দেব না। ইনশাআল্লাহ, বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও মুজিববাদীদের হবে না।