ঢাকা অফিস
ঢাকার প্রবেশমুখে ২৯ জুলাই বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিকে ঘিরে সংঘর্ষ-সহিংসতার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি বসে বসে স্বপ্ন দেখে, নিষেধাজ্ঞার আতঙ্ক ছড়ায়। ভিসানীতির আতঙ্ক ছড়ায়। বিএনপি রাস্তা বন্ধ করেছে, প্রবেশপথে অবস্থান করেছে। এর জন্য তো ভিসানীতির প্রয়োগ হওয়া দরকার, নিষেধাজ্ঞা আসা দরকার। আমেরিকা বলেছে সুষ্ঠু নির্বাচনে যারা বাধা দেবে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেবে। বিএনপির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় না কেন? সে প্রশ্ন আমরা করতে চাই।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এ সমাবেশে আয়োজন করে। একই দিন আওয়ামী সরকারের পদত্যাগের ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের এক দফা দাবিতে রাজধানীতে কালো পতাকা ও গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। তাদের পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে আওয়ামী লীগ এই শান্তি সমাবেশ করে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীরের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন।
ঢাকার প্রবেশমুখে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেই অবস্থানে আমানউল্লাহ আমান ফলের রস খেয়ে বুঁদ হয়ে গেছে। সেই অবস্থানের পরিণতি গয়েশ্বর… পুলিশ অফিসার হারুন নাকি কিশোরগঞ্জ থেকে কোরাল মাছ এনেছে, কোরাল মাছের ঝোল খেতে খেতে গয়েশ্বর দিশেহারা। আন্দোলনের ১২টা বেজে গেছে। অতিরিক্ত কাপড় নিয়ে এসেছিল যারা তারাও ধানক্ষেত, এখান দিয়ে ওখান দিয়ে পালিয়ে যার যার বাড়ি ঘরে চলে গেছে। এই মানুষগুলো আর আসবে ঢাকায়?
বিএনপির কালো পতাকা মিছিল ও গণমিছিলের সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, এটা দেখে আমি ভাবলাম তাদের আবার কে মারা গেলো? তাহলে কালো পতাকা কেন? কালো পতাকা মিছিল করে কেন? কেউ মারা গেছে? কালো পতাকা মিছিল মানেই হলো শোকের মিছিল। বিএনপি শোক করছে কেন? আন্দোলনের ১২টা বেজে গেছে। এখন নেতারা নিজেদের অজান্তে শোকের মিছিল করছে। আমরা আগস্ট মাসে কালো পতাকা ব্যবহার করি। আন্দোলনের পতাকা হচ্ছে লাল।
আগামী ২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পুরোনো বাণিজ্যমেলা মাঠে আওয়ামী লীগের সমাবেশের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যে মিছিলে জনগণ নাই, সেই মিছিল গণমিছিল হয় কেমন করে? মিছিল দেখবেন? মিছিল দেখাবো। একপ্রান্ত ঢাকার যাত্রাবাড়ী, আরেকপ্রান্ত… এদিকে মিরপুর ওইদিকে সবুজবাগ। আওয়ামী লীগের মিছিল মানে সারা শহরে ঢল নামে। দেখবেন ২ তারিখে (২ সেপ্টেম্বর), দেখবেন ১ তারিখে তারুণ্যের সমাবেশ। ওই দিন লক্ষ তরুণের হাতে আমরা দেখাবো বিজয়ের পতাকা হাতে, শোকের কালো পতাকা নয়।
রোহিঙ্গারা আমাদের বোঝা হয়ে আছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতিসংঘ আগে ১২ ডলার দিতো, এখন সাহায্য কমিয়ে ৮ ডলার দেয়। কীভাবে চলবে? কেউ সাহায্য করে না, শুধু মুখে সুন্দর সুন্দর কথা বলে, রোহিঙ্গাদের জন্য মায়াকান্না কাঁদে। তারা তাদের দেশের অন্য দেশের মাইগ্রেন্ট জায়গা দিতে পারে, কিন্তু রোহিঙ্গাদের জায়গা হয় না।
রোহিঙ্গাদের কারণে দেশের বড় সমুদ্রসৈকত এবং সেখানকার জীবন বিপন্ন, অর্থনীতি ও পর্যটন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে মুখে সুন্দর সুন্দর বাণী উচ্চারণ করে, আমাদের নেত্রীর প্রশংসা করে। কিন্তু বাস্তবে সাহায্য করার জন্য কেউ আসে না।
দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে বাংলাদেশের আর কোনও রাজনৈতিক শক্তি নেই যারা আমাদের পরাজিত করতে পারে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আবারও ক্ষমতায় আসবে।
বিএনপি দেশকে আবারও অস্থিতিশীল করতে চায় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, আন্দোলন নামে দেশে কোনও অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে। বিএনপির মতো সন্ত্রাসী দলের হাতে এ দেশের হাল আমরা ছেড়ে দিতে পারি না।