আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে অবস্থান করে নানা ধরনের ‘উস্কানিমূলক’ বক্তব্য দিচ্ছেন। সম্প্রতি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ ব্যাপারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তবে মোদি জানিয়েছেন, তিনি শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না।
কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল জাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এসব কথা বলেন তিনি। রোববার (২৭ এপ্রিল) ‘মুহাম্মদ ইউনূস : রিয়েল রিফর্ম অর জাস্ট আ নিউ রুলিং ক্লাস ইন বাংলাদেশ?’ শিরোনামে এ সাক্ষাৎকার আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
সাক্ষাৎকারে আল জাজিরার সাংবাদিক শেখ হাসিনাকে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। তখন তার বিভিন্ন বক্তব্য ও বিবৃতি দেয়ার বিষয়টি উঠে আসে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। কিন্তু জবাবে মোদি বলেছিলেন তিনি এটি পারবেন না। কারণ ভারতে সবাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। অর্থাৎ শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।
জবাবে ড. ইউনূস বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিমসটেকভুক্ত দেশের সব সরকারপ্রধান এসেছিলেন। তার (মোদি) সঙ্গে আমার কথা হয় এবং আমি তাকে স্পষ্ট করি, ঠিক আছে, যদি আপনারা তাকে (হাসিনা) রাখতে চান, তাহলে এটা নিয়ে হয়তো আপনার সঙ্গে আমি মীমাংসায় আসতে পারবো না। কিন্তু তিনি যখন সেখানে থাকবেন, অবশ্যই তার কথা বলা উচিত হবে না। কারণ তার বক্তব্য আমাদের জন্য অনেক সমস্যা তৈরি করছে।
আল জাজিরার সাংবাদিক তখন জিজ্ঞেস করেন মোদি কী বলেছিলেন? জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘তিনি বলেছিলেন-ভারত হলো এমন দেশ যেখানে সামাজিক মাধ্যম সবার জন্য উন্মুক্ত। আমি এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না।’
এছাড়াও জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন তিনি।
জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। মে মাসের শুরুতে বিচার শুরু হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হয়েছে। যদিও এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক জবাব দেয়নি ভারত।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি।