নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামি ২৭ মে যশোরে সমাবেশ করবে বিএনপি। এতে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এসমাবেশ গত দুই-তিন ধরে প্রতিহতের হুমকি দিচ্ছে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ। তবে হুমকি আমলে নিচ্ছে না বিএনপি। হুমকি ধামকি ও বাধা উপেক্ষা করেই সমাবেশ সফল করবেন বলে বিএনপির নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রেস ক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলটির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার, নির্যাতনসহ সরকার পদত্যাগের ১০ দফা দাবিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২৭ মে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে যশোর জেলা বিএনপি। সমাবেশ সফল করতে জেলা বিএনপি ইতিমধ্যে সকল উপজেলা ও ইউনিয়নে প্রস্তুতিসভা সম্পন্ন করেছে। বিএনপির জনসভাকে ঘিরে যখন সকল প্রস্তুতি চলছে, সেই মুহূর্তে যশোর আওয়ামী লীগ ঘোষণা দেয় বিএনপির সমাবেশ প্রতিহত করার। গত কয়েকদিনে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতাদের হুমকিমূলক বক্তব্য আর সমাবেশের অনুমতি না পাওয়া নিয়ে বিএনপির সার্বিক অবস্থান সম্পর্কে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ২৭ মে যশোরে বিএনপির সমাবেশ করার দিনক্ষণ চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকে পুলিশ নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতারে নেমেছে। এই গণগ্রেফতারের মধ্যেই আমরা সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে দুঃখের বিষয় প্রথমে আমরা শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগা ও টাউন হল ময়দানে অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু ঈদগাহে ঈদের প্যান্ডেল থাকাতে অনুমতি দেয়নি। আর টাউন হল ময়দানে আমাদের সমাবেশের অনুমতি চাইলে আমাদের না দিয়ে সরকার দলীয় শ্রমিক সংগঠনটিকে অনুমতি দেয়। তবে শহরের ভোলা ট্যাংক রোডে তাদের সমাবেশ করার মৌখিক অনুমতি দেয়া হয়েছে। সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের হামলা হুমকি উপেক্ষা করেই এই সমাবেশ সফল করা হবে। আমাদের যে দাবি সেই দাবিতে সাধারণ জনগণের দাবি। সেই দাবি আদায়ে আমরা আমাদের নৈতিক অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াবো না। যশোরে সমাবেশকে ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন হুমকিমূলক বক্তব্য প্রদান করছে। তাদের সেই হুমকিতে বিএনপি নেতাকর্মীরা বিচলিত না।
আওয়ামী লীগ বলছে-প্রতি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে তারা পাহারা দেবে। সে ক্ষেত্রে কোনো সংঘাতের আশঙ্কা করছেন কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান আমাকে সভা সমাবেশ করার অধিকার দিয়েছে। সেই সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন; কিংবা সংবিধান সমন্বিত রাখবার জন্য যে সমস্ত সরকারি কর্মকর্তারা যশোরে দায়িত্ব পালন করছেন তারা নিশ্চয়ই এটা বিবেচনা করবে। দায়িত্বটা তাদের। আমি আমার গণতান্ত্রিক অধিকারের বাইরে কিছু বলছি না। আওয়ামী লীগ সব জায়গায় তারা সংঘাত সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করেছে। প্রশাসন দিয়ে চেষ্টা করেছে, গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ করে দিয়ে চেষ্টা করেছে তারা তো কোনো পথই বাকি রাখেনি। নতুন কোনো পথ খোলাও রাখেনি। আমরা সংঘাত এড়িয়েই সমাবেশে করবো।
প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস ইসলাম, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ, সাধঅরণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু প্রমুখ।
এই বিষয়ে জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইন বলেন, বিএনপি ভোলা ট্যাংক রোডে সমাবেশ করবে এটা পুলিশের অবহিত করেছে। সমাবেশ কেন্দ্র করে পুলিশ তৎপর থাকবে। যাতে কোন সহিংসতা না হয়।