শাহারুল ইসলাম ফারদিন: রোজার প্রথম দিনের শেষ বেলায় যশোরের বিভিন্ন বাজার, অলিগলি, অভিজাত হোটেল-রেস্তোরাঁয় জমে ওঠে ইফতার বাজার। গত দুই বছর করোনার কারণে সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় ভ্রাম্যমাণ দোকান খুব একটা বসেনি। এ বছর সে সীমাবদ্ধতা না থাকায় সব জায়গায় ইফতারির বেচা-কেনা ঘিরে তৈরি হয়েছে অন্যরকম আমেজ।
রোববার বিকেলে যশোরের চৌরাস্তা, দড়াটানা, চিত্রার মোড়, মাইকপট্টি, জজকোর্ট মোড়, রেলরোড, চার খাম্বার মোড়, হাসপাতাল মোড়সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত হোটেল-রেস্তোরাঁর পাশাপাশি বসে অসংখ্য ভ্রাম্যমাণ দোকানও। সেসব দোকানে ছোলা, বুট, মুড়ি, পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, ডিম চপ, দই বড়া, ডাবলির ঘুঘনি, মিষ্টি, শাহী হালিম, গরু-মুরগি-খাসির হালিম, কাবাব, সবজি পাকোড়া, মাংসের চপের পাশাপাশি অনেকে তাদের নিজস্ব বিশেষ আয়োজন নিয়ে বসে। যার মধ্যে রয়েছে কবুতর ও কোয়েলের রোস্ট, রেশমি জিলাপি, বোম্বে জিলাপি, রেশমি কাবাব, গ্রিল চিকেন, বুন্দিয়া, গরুর কালো ভুনা, কাচ্চি, মগজ ভুনা, চিংড়ি বল, পরোটা, লুচি, চিকেন তান্দুরি, চিকেন বটি কবাব, দই চিড়া। ছিল পেস্তা বাদাম, শরবত, বেলের শরবত, তরমুজের শরবতসহ অসংখ্য পানীয়র আয়োজন।
দোকানদাররা জানান, ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার কথা চিন্তা করে সর্বনি¤œ পাঁচ টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার টাকা মূল্যের ইফতারি পণ্য রাখা হয়েছে।
এছাড়া রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিক্রি হয়েছে কলা, বাঙ্গি, তরমুজ, আনারস, আপেল, আঙ্গুর, লেবু, শশা, ধনিয়াপাতা, মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের খেজুর। ইফতারে খেজুর ও ফলের চাহিদা বেশি থাকায় এসব দোকানে বেশি ভিড় দেখা যায়।
ফুডপার্কের সাইফুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক বছর সরকারি বিধিনিষেধের কারণে এখানে কোনো অস্থায়ী দোকান বসেনি। হোটেলগুলোতে সীমিত পরিসরে ইফতারি বিক্রি হয়েছে। এবার আমরা বসার সুযোগ পেয়েছি। প্রথম দিনে বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি।
ডব্লিউ নামের এক বিক্রেতা বলেন, সম্প্রতি তেলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ায় এর প্রভাব পড়েছে ইফতারের দামেও। বেশি দামের ইফতার চলছে খুব কম। আলুর চপ, ছোলা বুট, মুড়ি, পেঁয়াজু, বুন্দিয়ার চাহিদাই বেশি। কাঁচামালের দাম বাড়ায় রেশমি জিলাপির দামও গতবারের তুলনায় বাড়াতে হয়েছে।
রোজার প্রথম দিনে ফলের প্রতিও মানুষের আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। তরমুজ, মালটা, কলা, আপেলের চাহিদা ছিল বেশি। আপেল, মালটার দাম অন্যান্য সময়ের মতো থাকলেও তরমুজ এবং কলার দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি। ছোট আকৃতির তরমুজ কিনতে লাগছে দুইশ থেকে আড়াইশ টাকা। বড় আকৃতির তরমুজের দাম হাঁকা হচ্ছে পাঁচশ-ছয়শ টাকা।
ফল বিক্রেতা মোস্তফা বলেন, সারাদিন রোদ থাকায় তরমুজ, বাঙ্গির বিক্রি ভালো হচ্ছে। তবে তরমুজের সিজন শুরুর কারণে দাম কিছুটা বেশি। যার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। তবে দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর দামও কমে আসবে। তাছাড়া অন্যান্য ফলের দাম আগের মতোই রয়েছে বলে জানান তিনি।