কল্যাণ ডেস্ক
ইসরায়েলে ইরানের শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর অনেকটাই দোলাচলে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের শঙ্কা, জবাবে ইরানের পরমাণু ও তেল স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল। আর এ নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন বাইডেন প্রশাসন। কেননা এ সংঘাতের ফলে মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের আঞ্চলিক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্রকেও টেনে আনতে পারে।
বার্তা সংস্থা সিএনএন জানিয়েছে, আরও একটি বড় আশঙ্কা হলো— গত এক বছরে ইসরায়েলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব ক্রমাগতভাবে কমছে। গাজার মতো লেবাননেও হামলায় সংযত হওয়ার মার্কিন আহ্বানকে ধারবাহিকভাবে উপেক্ষা করছে ইসরায়েল। যেখানে গত মাসের শেষ দিক থেকে ইসরায়েলের ব্যাপক বোমা হামলা ও স্থল আক্রমণে ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে।
গত মাসে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের ব্যবহৃত হাজার হাজার পেজার ও ওয়াকিটকিতে বিস্ফোরণ ঘটায় ইসরায়েল। এছাড়া বৈরুতে হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা ও এর ৪৮ ঘণ্টারও কম সময় আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব বাতিল করে ইসরায়েল। এসব বিষয়ে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো পরামর্শ করেনি।
দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা কীভাবে অগ্রসর হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি, শুক্রবার একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন। আর যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দূরত্ব কমলেও তা সেভাবে না-ও থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা।
ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার আলোচনার বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘তারা ভোট দিয়েছে কি না তা আমরা আসলে জানতে পারছি না। ওই কর্মকর্তা বলেন, ইসরায়েল সরকারের ‘পরিকল্পনায় তাদের খুব বেশি অংশগ্রহণ থাকে না’।
গাজার শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত ২২গাজার শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত ২২
সিএনএন জানিয়েছে, গত সপ্তাহ পর্যন্ত ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করবে না এমন কোনো নিশ্চয়তা যুক্তরাষ্ট্রকে দেয়নি।
ইসরায়েল গত কয়েক দশক ধরে ইরানের পরমাণু স্থাপনার ওপর হামলার পরিকল্পনা করে আসছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের গুপ্তহত্যা ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সাইবার হামলা চালানোর জন্যও ইসরায়েলকে সন্দেহ করা হয়। ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বাইডেন প্রশাসন। যা চলতি বছরের শুরুতে দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে ইসরায়েলি হামলার মাধ্যমে শুরু হয়।
ভারতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সাবেক আইনমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন তাকজিলভারতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সাবেক আইনমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন তাকজিল
গত ১ অক্টোবর ইরানের হামলার প্রতিক্রিয়ার পরিকল্পনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে পরামর্শ করছে। মার্কিন কর্মকর্তারা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তারা চান না ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনা বা তেলক্ষেত্রগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করুক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত বুধবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রায় দুই মাসের মধ্যে তাদের প্রথম কথোপকথনে বাইডেন বলেন, ইসরায়েলের প্রতিশোধ ‘সমানুপাতিক’ হওয়া উচিত।
সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও কাতারসহ যুক্তরাষ্ট্রের উপসাগরীয় মিত্ররাও ইরানের তেল স্থাপনায় সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ হামলা পুরো অঞ্চলের জন্য নেতিবাচক অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত প্রভাব ফেলতে পারে, একজন আরব কূটনীতিক সিএনএনকে বলেছেন।