# ছিনতাইকারী, অজ্ঞানপার্টি ও চাঁদাবাজদের ধরতে অভিযান
# পশুহাট ঘিরে বাড়তি নজরদারি করতে পুলিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে যশোরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তৎপর রয়েছে পুলিশ। মাদক কারবারি, ছিনতাইকারী, অজ্ঞানপার্টি ও চাঁদাবাজদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। এসব চক্রের উপর বিশেষ নজর রয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর। এছাড়া পশুহাট ঘিরে যাতে কোন অপরাধ সংঘটিত না হয় সেবিষয়েও বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার।
পুলিশ সুপার বলেন, ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে যশোরে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য তৎপর রয়েছে পুলিশ। সাধারণ মানুষ মনের আনন্দে ঈদ উদযাপন করবেন। নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিবে পুলিশ। এরপরও যদি কোথাও কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে দ্রুত জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা সভায় মাসিক অপরাধ চিত্রের প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত এপ্রিল মাসের তুলনায় মে মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিলো। মে মাসে জেলার ৯টি থানায় বিভিন্ন অপরাধের কারণে ২৫০ টি মামলা রেকর্ড হয়েছে। যা গত এপ্রিল মাসে ছিলো ৩৩৮ টি। এরমধ্যে মাদকদ্রব্য আইনে ১১৫ ও ৪টি হত্যা মামলা রেকর্ড হয়েছে।
পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার বলেন, একটা সময় যশোরে প্রতিমাসে ডাবল ডিজিটে হত্যা মামলা রেকর্ড হতো। কিন্তু পুলিশের অক্লান্ত পরিশ্রমে এখন সেই পরিস্থিতি নেই। যশোরের মানুষ এখন শান্তিতে বসবাস করতে পারেন।
আইনশৃঙ্খলা সভায় জেলার বিভিন্ন স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার তথ্য তুলে ধরেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার। তিনি জানান, মে মাসে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে মোট জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৪ লাখ ৪৬ হাজার ৩৫০ টাকা। এরমধ্যে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অনুযায়ী নিয়মভঙ্গ করায় ৯৪ জন আসামির কাছ থেকে ১ লাখ ৫১ হাজার এবং উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচারণ) বিধিমালা ২০১৬ অনুযায়ী ৫১টি মামলায় প্রার্থীদের কাছ থেকে ১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, জেলায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা বেড়েছে। কিশোরগ্যাং আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তাদের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশের আরও কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। অনলাইনে ধারালো চাকু ছুড়ির সহজ লভ্যতা বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শহরের যানজট নিরসনে পৌরকর্তৃপক্ষ ব্যর্থ। কয়েকদফা সিদ্ধান্তের পরও পৌরসভা শহরে জোরালো উচ্ছেদ অভিযান চালাতে পারেনি। শহরের প্রাণকেন্দ্র দড়াটানা, হাসপাতাল গেটে সবসময় যানজট লেগে থাকে। এবিষয়ে পৌর মেয়রকে বিশেষ নজর দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদারের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, পৌর মেয়র হায়দার গণী খান পলাশ, মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু, বেনাপোলের পৌর মেয়র নাসির উদ্দীন, যশোর আদালতের পিপি এম. ইদ্রিস আলীসহ র্যাব, বিজিবি, আনসার ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।