নিজস্ব প্রতিবেদক
পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ব্যাপক নিরাপত্তা নিয়েছে যশোর জেলা পুলিশ। ঈদগাহ ময়দান থেকে শুরু করে জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোবাইল টিমসহ টহল ডিউটির মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এই অবস্থা ছুটি পরবর্তী সময় পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ (অর্থ ও প্রশাসন) নুর ই আলম সিদ্দিকী।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যশোরের গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহ গুলোতেও পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। একাধিক টিম ঈদগাহের আশপাশে থাকবে। এছাড়া শহর ও শহরতলীর প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে থাকবে চেকপোস্ট। বেপরোয়া গতিতে কেউ যাতে চলাফেরা করতে না পারে সে জন্য থাকবে একাধিক মোবাইল টিম। বিশেষ করে মোটরসাইকলে গুলোর ওপর নজর রাখা হবে।
আরো জানা গেছে, ঈদের ছুটিতে বিভিন্ন বিপনী বিতান, গুরুত্বপূর্ণ ভবন, ব্যাংক বীমার অফিস গুলোর সামনে থাকবে পুলিশের টহল। বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও এটিএম বুথ গুলোতে নিজস্ব নিরাপত্তার পাশাপাশি টহল ডিউটিতে থাকবে নিরাপত্তা বাহিনী। জেলায় মোবাইল টিম থাকবে অর্ধশতাধিক। যে সব পুলিশ সদস্যে ঈদের ছুটি থাকবেনা, তারা প্রত্যেকে কাজ করবেন।
শহরের অনেক মানুষ ছুটিতে ঈদ উদযাপনের জন্য গ্রামের বাড়িতে যান। এ সময় বিভিন্ন বাসাবাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে থাকে। এ লক্ষ্যে বাড়ির মালিককে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। যে কোনো প্রয়োজনে পুলিশের মোবাইল টিম, নিকটস্থ থানা, ফাঁড়ি, ক্যাম্পসহ সংশ্লিষ্ট বিট অফিসারদের সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
পুলিশি এসব টিমের মধ্যে রয়েছে, ফুট প্যাট্রোল, মোবাইল টিম, পিকেট টিম, বাইক মোবাইল ডিউটি টিম। আটটি উপজেলার পাশাপাশি শহর ও শহরতলীর অপরাধ প্রবণ এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে যশোরের জেলা পুলিশ।
যশোর শহর এবং শহরতলীতে ২৮টি মোবাইল টিম কাজ করবে, যারা শহরের প্রধান সড়ক, অলিগলি এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে টহল দেবে। চুরি, ছিনতাই ও অন্যান্য অপরাধ প্রতিরোধে ৪টি বিশেষ পিকেট টিম এবং ৭টি ফুট প্যাট্রোল টিম সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। এর পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও জোরদার করা হয়েছে।
যশোরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সাদা পোশাকে পুলিশের বিশেষ দল মোতায়েন থাকবে, যাতে অপরাধীদের দ্রুত চিহ্নিত করা যায় এবং প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি থানায় কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। যশোর প্রতিটি থানা এলাকা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একাধিক দল প্রয়োজনে দ্রুত অভিযানে নামবে। যে কোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশের একাধিক বাইক টিমও সক্রিয় থাকবে।
জেলা পুলিশের মূখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) নুর ই আলম সিদ্দিকী বলেছেন, শহরের যানজট কমানোর জন্য ট্রাফিক পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছে। রাস্তা দখলমুক্ত রাখতে ব্যবসায়ী, রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ও মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো যশোরবাসীর জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা, যাতে তারা নিশ্চিন্তে ঈদ উদ্যাপন করতে পারে। ঈদ পরবর্তী সময়ে এই নিরাপত্তা ব্যস্থা চলমান থাকবে।
অন্যদিকে জরুরি সেবা ৯৯৯-এর ফোন পেয়ে সেবা দিতে পুলিশের বাড়তি সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোথাও থেকে কোনো ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন তারা কার্যকর ব্যবস্থা নেন সে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।