রায়হান সিদ্দিক : গতকাল রোববার বিকেলে উদীচী যশোর প্রেসক্লাব সম্মেলন কক্ষে ‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী: বর্তমান আর্থ সামাজিক রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে সাংস্কৃতিক আন্দোলন কতটা জরুরী’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারের শুরুতে সংগঠনের নাট্য সম্পাদক আসিফ আকবর নিপপন সেমিনারের বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
উদীচী যশোর জেলা সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাবুবুর রহমান মজনুর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন জাসদের কার্যকারী সভাপতি বীর মুক্তিযদ্ধা রবিউল আলম, যশোর সংবাদপত্র পরিষের সভাপতি, দৈনিক কল্যাণ সম্পাদক ও উদীচীর উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা একরাম-উদ-দ্দৌলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিরুল আলম রন্টু, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ যশোর জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক তন্দ্রা ভট্টাচার্য্য, তির্যক যশোরের সাধারণ সাম্পাদক দীপংকর দাস রতন, যশোর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রাবণী সুর, মুক্তিযোদ্ধা ও সিপিবি নেতা লিয়াকত আলী, সাংবাদিক শিকদার খালিদ, সাংবাদিক প্রণাব দাস, অ্যাডভোকেট বাসুদেব বিশ্বাস, অধ্যাপক সোলজার রহমান, অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান হিরু, সোমেন মুখার্জী প্রমুখ।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সর্বস্তরে রাজনীতি বিদ্যামান। তবে ব্যবসা ভিত্তিক রাজনীতি জাতিকে মেধাশূন্য করে দিচ্ছে। স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত রাজনৈতিক ইতিহাস দেখলে বোঝা যায় এদেশের রাজনৈতিক নেতারা সাধারণ মানুষের অধিকার হরণ করে নিজেদের সাম্রাজ্য তৈরি করছে। আমাদের রাজনৈতিক নেতারা সব সময় দুর্নীতির শীর্ষে অবস্থান করে এর মূল কারণ ব্যবসা ভিত্তিক রাজনিতি, অন্যদিকে এদেশের মেধাবী সন্তানদের ভেতর বিদেশে পাড়ি দেবার প্রবণতা অনেক বেশি বেড়েছে। যার ফলে কুচক্রী ও মূর্খরা দেশ শাষনের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসার সুযোগ পাচ্ছে। বক্তরা আরো বলেন, বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থার যে নাজুক অবস্থা তাতে করে আগামী প্রজন্মের কাছে ভালো কিছু আশাকরা খুব কঠিন হয়ে পড়বে। তথ্য প্রযুক্তির যুগে বেপরোয়া ইন্টারনেট ব্যবহার এই প্রজন্মের শৈশবকে বিলীন করে দিচ্ছে। স্বাধিনতার পঞ্চাশ বছরেও সুস্থ ধারার সংস্কৃতি চর্চা তৈরি হয়নি যা আমাদের জন্য চরম লজ্জাজনক। এভাবেই চলতে থাকলে এক সময় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিলীন হয়ে যাবে।
জাসদের কার্যকারী সভাপতি বীর মুক্তিযদ্ধা রবিউল আলম বলেন, আমরা যে লক্ষ্য নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি সেই চেতনা আজ বিলীন হবার পথে এর মূল কারণ বর্তমান প্রজন্মের মাঝে দেশপ্রেমের ঘাটতি রয়েছে। একাত্তরের মৌলবাদীরা এখনো সক্রিয় আর যতদিন ধর্মের গোড়ামী থাকবে ততদিন বাংলাদেশের এই রুপ পরিবর্তন হবে না।
একই সুরে কথা বললেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা একরাম-উদ-দ্দৌলা তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক আন্দোলন ছাড়া আজ পর্যন্ত কোন আন্দোলনই সফল হয়নি। বর্তমান পরিস্থিতে আর একটি যুদ্ধের প্রয়োজন এবারের যুদ্ধ হোক সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।
শিশুদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উজ্জিবিত করতে হবে। সাংস্কৃতিক চেতনা ধারন না করলে পতিবর্তন সম্ভব না। পারিবার থেকে সাংস্কৃতিক বিপ্লব ঘটাতে হবে। স্কুল ভিত্তিক সাংস্কৃতিক শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। স্বতঃস্ফূর্ত এই আলোচনায় অন্যান্য বক্তারা এই বিষয়গুলো তুলে ধরেন।