নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর মাড়ুয়া মন্দির সংলগ্ন পতিতালয়ের সামনে রাস্তা থেকে এক কিশোরকে ধরে নিয়ে দুই হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে যৌনকর্মীরা। এই ঘটনায় সদর ফাঁড়ি পুলিশের কাছে অভিযোগ করে ভুক্তভোগী কিশোর। কিন্তু ওই কিশোরকে ভাংচুর মামলার ভয় দেখিয়ে অর্ধেক টাকায় ভাগ বসিয়েছে সদর ফাঁড়ি পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এই ঘটনার পর সন্ধ্যায় ওই কিশোর পুলিশি মামলার ভয়ে অর্ধেক টাকা ফেলেই গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকোপা উপজেলার চণ্ডিপুর গ্রামে চলে যায়।
ভুক্তভোগী কিশোর সেলিম হোসেন (১৬) জানিয়েছে, সে অভাব অনাটনের সংসারে যশোর শহরের বিভিন্ন চায়ের দোকানে পানি এনে জীবিকা নির্বাহ করে। আর ওই টাকা বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা ও মাসহ ভাই বোনদের কাছে পাঠায়। গতকাল ১১ জুন বিকেলে ৫টার দিকে বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করে। কিন্তু একটি রিক্সায় উঠে কোতোয়ালি থানার পায়েই মাড়–য়া মন্দির সংলগ্ন পতিতালয়ে সামনে দিয়ে পায়ে হেঁটে এমকে রোড জেসটাওয়ারের দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু সেখানকার দুই নম্বর পতিতালয়ে গলি থেকে বের হয়ে আসার মিনা ও আখি নামে দুই যৌনকর্মী সেলিমকে জোর করে ধরে ভিতরে নিয়ে যায়। এরপর তার কাছে থাকা দুই হাজার দুইশ পঞ্চাশ টাকা ছিনিয়ে নেয়। তারপর কিশোর সেলিমকে বেধড়ক মারপিটের পর ছেড়ে দেয়। এদিন বিকেলে ভুক্তভোগী সেলিম প্রেসক্লাব যশোরে গিয়ে জানায়। পরে বিষয়টি সদর ফাঁড়ি ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক ফকির পান্নু মিয়াকে জানানো হয়। ফকির পান্নু মিয়া ফাঁড়ি থেকে এএসআই মহাসিনকে ওই পতিতালয়ে পাঠিয়ে ঘটনার বিষয় জানার চেষ্টা করেন। কিন্তু এএসআই মহাসিন যৌনকর্মীদের পক্ষ নিয়ে ভুক্তভোগী সেলিমকে বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এরপরে যৌনকর্মী মিনা ও আখিসহ ভুক্তভোগী সেলিমকে ফাঁড়িয়ে নিয়ে যান এএসআই মহাসিন। ফাঁড়ি ইনচার্জ ফকির পান্নু মিয়া যৌনকর্মীদর পক্ষ নিয়ে এসময় ভুক্তভোগী সেলিমকে ভুংচুর মামলায় আটক করার ভয় দেখান। একপর্যায় সেলিমকে এক হাজার টাকা ফেরৎ দিয়ে বলেছেন যদি বেশি টাকা দাবি করিস তাহলে তোর বিরুদ্ধে ভাংচুরের মামলা দিয়ে জেলখানায় আটক করবো। মামলায় আটকের ভয়ে ভুক্তভোগী সেলিম দ্রুত বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করেন।
উল্লেখ্য, মাড়ুয়া মন্দির সংলগ্ন পতিতালয়ের দুই নম্বর গলির সর্দারনী বিনা খাতুন এবং বাবু নামে এক দালাল ওই এলাকায় পতিতাদের দিয়ে রাস্তায় চলাচলরত বিভিন্ন লোকজনদের ধরে নিয়ে টাকা, মোবাইল ও জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে সদর ফাঁড়ি পুলিশ দিয়ে উল্টো মামলার ভয় দেয় দেখান বলে বিভিন্ন লোকের অভিযোগ রয়েছে।
তবে এই ব্যাপারে সদর ফাঁড়ি ইনচার্জ ফকির পান্নু মিয়া কোন বক্তব্য দিয়ে রাজি হননি।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) বেলাল হোসাইন বলেছেন, বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
