যবিপ্রবি প্রতিনিধি
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, রিজেন্ট বোর্ড সদস্যসহ উপাচার্যের সকল অনুসারীর পদত্যাগের দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল ও ‘মার্চ টু প্রশাসনিক ভবন’ কর্মসূচি পালন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তারা পদত্যাগ না করলে ইউজিসি ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার হুশিয়ারি দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুর ১২ টায় যবিপ্রবির প্রধান ফটকের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল ‘মার্চ টু প্রশাসনিক ভবন’ শুরু করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। সমাবেশে বক্তারা উপাচার্যসহ, ট্রেজারার, উপাচার্যের সকল সিন্ডিকেট, রিজেন্ট বোর্ড সদস্য ড. ইকবাল কবির জাহিদসহ উপাচার্যের অনুসারীদের পদত্যাগের জোর দাবি জানান।
একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থী আকিব ইবনে সাইদ বলেন, পদত্যাগের বিষয়ে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কারো বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির খোঁজ পাওয়া গেলে তাকে ছেড়ে দেবে না শিক্ষার্থীরা।
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন আলী বলেন, উপাচার্য মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের হওয়ায় তিনি প্রশাসনিক বড় পদগুলোতে ওই বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে তাঁর বলয় বড় করেছে। বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। এসব সিন্ডিকেটও ভেঙে দিতে হবে।
কেমিকৌশল বিভাগের সাদেকা শাহানি উর্মি বলেন, আমরা গত বুধবার থেকেই বিভিন্ন দফা নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছি, আজকেও আমরা সেই আন্দোলন সচল রেখেছি। ড. আনোয়ার হোসেন স্যার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছেন। তার কাছে আমরা যেই দাবিগুলো নিয়ে গিয়েছিলাম সেইগুলো তিনি একটাও যদি মেনে নেননি। আমরা দেখেছি একটি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ থাকার পরেও কিভাবে তারা শিক্ষার্থীদের মারধর করতে পরে এবং ভিসি স্যার নীরব থাকেন। আমাদের রাজাকারের স্লোগানের মর্মার্থ না বুঝেই তিনি বলেছেন কোনো রাজাকার যেন ক্যাম্পাসে না থাকতে পারে। তিনি নিজেকে শিক্ষার্থী বান্ধব শিক্ষক বলার পরেও কিভাব তিনি এইরকম কাজে সমর্থন দেন সেই প্রশ্নের উত্তর তিনি দিতে পারবেন না। এরপর দেখেছি শিক্ষার্থীরা শুক্রবারের নামাজ ও ক্যাম্পাসের ভিতরে পড়তে পারিনি।
তিনি আমাদের কাছে ৭ দিন সময় চেয়েছিলে, তার ৪দিন চলে গেছে এখনো কি সময় হয়নি আপনার এই কাজগুলো শেষ করে পদত্যাগ করার। আমাদের গত ৪-৫ বছর ধরে আশ্বাস দিয়ে আসা বিষয়গুলোর সফলতার মুখ দেখাতে পারেননি আমরা কিভাবে আশা করতে পারি যে তিনি ভবিষ্যতে সেইগুলা পূরণ করবেন। তিনি যে ৭ দিন পর পদত্যাগ করবেন আমরা সেইটারও কোনো প্রতিফলন দেখতে পারছিনা।
উল্লেখ্য, যবিপ্রবি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এ নিয়ে ৪র্থ দিনের মতো বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা। গতকাল উপাচার্যের বাসভবন ও প্রশাসনিক ভবনের তালা দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শনিবার উপাচার্যের বাসভবন ও প্রশাসনিক ভবনে শিক্ষার্থীদের দেওয়া তালাও ঝুলছে। এর আগে গত বুধবার বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে যবিপ্রবি উপাচার্যকে শনিবারের মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা।